দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২

নিহতদের স্বজনদের আহাজারি। সদর হাসপাতাল, পাবনা, ৩ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান মাহমুদ
নিহতদের স্বজনদের আহাজারি। সদর হাসপাতাল, পাবনা, ৩ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান মাহমুদ

পাবনা সদর উপজেলায় সোমবার রাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে দুই নারীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত দুজন হলেন সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের খাঁপাড়া গ্রামে গ্রামের লস্কর খান (৬৫) ও আওরঙ্গবাদ গ্রামের আব্দুল মালেক (৪৫)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই নারী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা সুলতান আহম্মেদ খানের বিরোধ চলছিল। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তখন বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এরপর বিভিন্ন সময়ে দুই পক্ষের সমর্থকেরা বিবাদে জড়ান। এর জের ধরে আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে খাঁপাড়া গ্রামে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাত থেকে আটজন আহত হন। স্থানীয় লোকজন ও স্বজনেরা তাঁদের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে লস্কর খান ও আব্দুল মালেককে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। লস্কর খান হলেন সুলতান আহম্মেদের বাবা, আবদুল মালেক তাঁর সমর্থক। আহত দুই নারী হচ্ছেন হালিমা খাতুন (৫০) ও প্রিয়া খাতুন (৩৫)। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চিকিৎসাধীন হালিমা খাতুন জানান, লস্কর খান নিজ বাড়ির সামনে কিছু লোকজন নিয়ে বসেছিল। এ সময় হঠাৎ গুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পাবনা সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. জালাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই পক্ষের এই বিরোধ দীর্ঘদিনের। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দুই পক্ষের লোকজনই গা ঢাকা দিয়েছে। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে আবু সাঈদ খান ও সুলতান আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাউকে পাওয়া যায়নি। দুজনেরই মুঠোফোন বন্ধ ছিল। তবে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রেজাউল রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক কোনো বিষয় নয়। পাবনা জেলায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা থেকে ঘটনাটি ঘটতে পারে। তবে এ ঘটনায় যেই দোষী হোক, আমরা তার শাস্তির দাবি জানাই।’