জাপার সাংসদসহ ১৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা

সিলেট-২ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির ও ছেলে আবরার ইলিয়াস। দুজনেরই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ত্যাগের সময় উৎফুল্ল মা-ছেলে। ছবি: প্রথম আলো
সিলেট-২ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির ও ছেলে আবরার ইলিয়াস। দুজনেরই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ত্যাগের সময় উৎফুল্ল মা-ছেলে। ছবি: প্রথম আলো

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনে ১৫ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট–৫ আসনে বর্তমান সাংসদ সেলিম উদ্দিনও রয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে মনোনয়নপত্র বাছাই কমিটি বিভিন্ন অসংগতি ও ত্রুটি থাকায় এসব মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে।

বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের মধ্যে একজন বিএনপির, দুজন জাতীয় পার্টি ও একজন করে মুসলিম লীগ, ইসলামী আন্দোলন এবং ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী রয়েছেন। সিলেট-৫ আসনের সাংসদ সেলিম উদ্দিন একই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ ছাড়া সিলেট-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি। দুটি মনোনয়নপত্রের হলফনামায় তাঁর স্বাক্ষর না থাকায় বাছাইয়ের সময় বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ১৫টি মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও এক প্রার্থী দুই সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় ১৪ ব্যক্তির মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনে মুসলিম লীগের প্রার্থী আনোয়ার উদ্দিন বোরহানাবাদীর হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় তা বাতিল করা হয়। আসনটিতে ১০ প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর) আসনে তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন এনামুল হক সরদার, মোহাম্মদ আব্দুর রব, মুহিবুর রহমান। তাঁদের তিনজনেরই হলফনামায় দেওয়া ১ শতাংশ ভোটার তালিকার তথ্যে (জনসমর্থন) অসংগতি থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। আসনটির বাকি ৯ প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী আবদুল কাইয়ুমের হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ও মো. আবদুল ওদুদের মনোনয়নপত্রের ১ শতাংশ ভোটার তালিকার তথ্যে (জনসমর্থন) অসংগতি থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। আসনটির ১০ জন প্রার্থীর মনোয়ন চূড়ান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট-কোম্পানীগঞ্জ-জৈন্তাপুর) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া আট প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এম ইসমাইল আলীকে দলীয় মনোনয়ন না থাকায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। আসনটির বাকি ৭টি মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে।

সিলেট-৫ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ১২ প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন ও স্বতন্ত্র ফয়জুল মুনির চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী এম এ মতিন চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী নুরুল আমীনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। নুরুল আমীনের বিরুদ্ধে জামিনদার হয়ে ঋণখেলাপির অভিযোগও রয়েছে বলেও জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আহমদ আল ওয়ালীর হলফনামায় ১ শতাংশ ভোটার তালিকায় অসংগতি থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী সেলিম উদ্দিন এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাঁর হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় তা বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়ার দেওয়া ১ শতাংশ ভোটার তালিকার (জনসমর্থন) তথ্যে অসংগতি থাকায় বাতিল ঘোষণা করা হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, বাতিল করা প্রার্থীরা আগামী তিন দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আপিল করতে পারবেন। এ সময় তিনি ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেও জানান।