কুষ্টিয়ায় চনমনে আওয়ামী লীগ, দ্বিধায় বিএনপির কর্মীরা

কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন, উঠান বৈঠক, সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়সহ নানা কার্যসূচিতে ব্যস্ত সময় পার করছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে নির্বাচনের মাঠে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আছেন সন্দিহান। জেলার চারটি আসনের মধ্যে একটি বাদে তিনটিতেই দুজন করে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তাঁদের মনোনয়নও বৈধ ঘোষণা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কে পাবেন চূড়ান্ত মনোনয়ন, তা নিয়ে দ্বিধায় দলের নেতা-কর্মীরা।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, ভোটের প্রচারণার ব্যাপারে জেলায় আওয়ামী লীগের মূল আকর্ষণ হলো উন্নয়ন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সদরসহ জেলার বেশ কিছু দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন। এসব উন্নয়নকে প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন নেতা-কর্মীরা। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মাসুম বলেন, সদরে আশাতীত উন্নয়ন হয়েছে। যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা জনগণ পেয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার উঠান বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে।

দলীয় সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচন ঘিরে একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়াও যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন গ্রামে গ্রামে গিয়ে উঠান বৈঠক করছে। এর বাইরে সামাজিক সংগঠনের কর্মীরাও মাঠে নেমেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারে নামা হবে। দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা এক হয়ে মাঠে নামবেন।

>মামলায় জর্জরিত বিএনপি অনেকটাই দুর্বল অবস্থায়। নেতা-কর্মীরা এখনো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে পারেননি।

অপর দিকে মামলায় জর্জরিত বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই দুর্বল অবস্থায়। নেতা-কর্মীরা এখনো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে পারেননি। এর মাধ্যে তিনটি আসনে দুজন করে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। কে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাবেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে গিয়ে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন এবার সদর আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী। তিনি তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে গ্রামে গ্রামে মতবিনিময় করছেন। তবে দলীয়ভাবে এখনো কোনো বৈঠক করতে পারেননি। একই আসনে দলের অপর মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকারও তাঁর গুটি কয়েক অনুসারী নিয়ে চলাফেরা করছেন।

একই অবস্থা মিরপুর-ভেড়ামারা ও কুমারখালী-খোকসা আসনেও। দুজন করে মনোনয়ন পাওয়ায় দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন নেতা-কর্মীরা।

সোহরাব উদ্দিনের সঙ্গে উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা ছাড়াও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আছেন। আর জাকিরের পক্ষে জেলা বিএনপির কয়েকজন এবং যুবদল ও ছাত্রদলের ৮-১০ জন নেতা-কর্মী আছেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে পক্ষ–বিপক্ষ তৈরি হওয়ায় মাঠের প্রচারে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে দলটি। এ অবস্থায় নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামা দলটির জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। সোহরাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা আচরণবিধি না মানলেও তাঁদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, তিনি চূড়ান্ত মনোনয়নের অপেক্ষায়। প্রচার-প্রচারণা জোরদার করতে দলীয় সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবাইকে নিয়ে মাঠে নামা হবে।