ঢাবি শিক্ষক সমিতিতে নীল দলের বিপুল বিজয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০১৯ সালের কার্যকরী পরিষদ নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে ১৪ পদেই জিতেছে আওয়ামী লীগ-সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল ৷ আজ মঙ্গলবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ৷ গত বছরও শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে নীল দল ১৪ পদে জিতেছিল।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতিবছরই শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হয় ৷ কার্যকরী পরিষদের ১৫টি পদে এ নির্বাচন হয়।

বেশ কয়েক বছর ধরেই শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে নীল দল বিজয়ী হচ্ছে ৷ এবার শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদে দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন ৷ এ নিয়ে অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল টানা তৃতীয়বার এবং অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম টানা দ্বিতীয়বার একই পদে নির্বাচিত হলেন ৷ বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল থেকে একজন কার্যকরী সদস্যপদে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভবনে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয় ৷ বেলা ২টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলে।

ভোট গণনা শেষে বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী ৷ তিনি জানান, শিক্ষক সমিতির ১ হাজার ৯৮৮ জন ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৫৫১ জন এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৷ এর মধ্যে একটি ব্যালট বাতিল হয়েছে ৷ ভোটদানের হার ৭৮ শতাংশ ৷

তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি ৷ জানতে চাইলে সাদা দলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক আখতার হোসেন খান বলেছেন, নির্বাচন-প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেচক শিক্ষকদের এ রায় তাঁরা মাথা পেতে নিয়েছেন ৷

সভাপতি পদে অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ১ হাজার ৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন৷ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের সভাপতি প্রার্থী মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান পেয়েছেন ৪৫৩ ভোট ৷

সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম পেয়েছেন ৮০৫ ভোট ৷ এ পদে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের প্রার্থী পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান পেয়েছেন ৬৮৯ ভোট ৷

এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের নীল ও সাদা দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ৷ বামপন্থী শিক্ষকদের গোলাপি দল গত বছরের মতো এবারও কোনো প্রার্থী দেয়নি ৷ এই নির্বাচনে নীল দলের প্রার্থীরা সব পদ মিলিয়ে মোট ১২ হাজার ৭৩২ ভোট পেয়েছেন ৷ ১৫টি পদে একটি করে মোট ১৫টি ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল প্রত্যেক ভোটারের ৷ সেই হিসাবে নির্বাচনে ভোট প্রদান করা ১ হাজার ৫৫০ ভোটারের (১ জনের ব্যালট বাতিল) মোট ভোট দাঁড়ায় ২৩ হাজার ২৫০ ৷ শতাংশের হিসেবে নীল দলের প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোট ৫৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ৷

অন্য পদগুলোতে নির্বাচিত যাঁরা
নীল দল থেকে সহসভাপতি পদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. ইমদাদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক পদে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাজিন আজিজ চৌধুরী এবং কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন ৷

এ ছাড়া গণিত বিভাগের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা, অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের অধ্যাপক নিসার হোসেন, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. আফতাব আলী শেখ, ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর দে নীল দল থেকে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ৷
সাদা দলের প্রার্থীদের মধ্যে শুধু কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাসানুজ্জামান সদস্য পদে জিতেছেন ৷