আয় ও সম্পদ বেড়েছে বর্তমান পাঁচ সাংসদের

সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনের সাংসদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে প্রত্যেকের আয় ও সম্পদ দুটোই বেড়েছে। এই পাঁচ সাংসদের তিনজন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির দুজন। প্রত্যেকেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে সিলেট-৫ আসনের সাংসদ সেলিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনের বর্তমান সাংসদ ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবার নির্বাচনে অংশ নেননি। সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসনের বর্তমান সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে গতকাল সোমবার প্রথম আলোয় ‘আয় কমে গেলেও শিক্ষামন্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের সাংসদ জাতীয় পার্টির ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী। এবারের হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর বার্ষিক আয় ১২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। তাঁর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৮৪ লাখ ৬৮ হাজার ৪৪৪ টাকার। তাঁর কোনো স্থাবর সম্পদ নেই। দশম সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার। সেবারও তাঁর কোনো স্থাবর সম্পদ ছিল না। এ দুটি হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরের ব্যবধানে তাঁর আয় বেড়েছে ১১ লাখ ৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৮৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪৪৪ টাকার।

>এই পাঁচ সাংসদের তিনজন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির দুজন। প্রত্যেকেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনের সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহমুদ–উস–সামাদ চৌধুরী। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর বার্ষিক আয় ৪৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। তাঁর ৯ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ২৯৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ ও ২ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮৬ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ১১ লাখ ১৬ হাজার টাকা, অস্থাবর সম্পদ ছিল ৮ কোটি ৮১ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৪ টাকার। আর স্থাবর সম্পদ ছিল ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫৫ হাজার ২০০ টাকার। দুই হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পাঁচ বছরের ব্যবধানে তাঁর আয় বেড়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ৫৮৪ টাকার, স্থাবর সম্পদ বেড়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৬ টাকার।

সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনের সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইমরান আহমদ। এবারের হলফনামা অনুযায়ী তাঁর বার্ষিক আয় ২৯ লাখ ৫১ হাজার ৬২৩ টাকা, অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৯৭ টাকার, স্থাবর সম্পদের মধ্যে ২৪ দশমিক ২৭ একর কৃষি জমি, ৪ দশমিক ৫০ একর অকৃষি জমি এবং শ্রীপুর চা-বাগানের দশমিক ১৫৪ অংশের মালিকানা রয়েছে তাঁর। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৫ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদ ছিল ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৩৮২ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৫৫ হাজার টাকার কৃষি জমি ও একটি চা-বাগানের দশমিক ১৫৪ অংশের মালিকানা রয়েছে। এ হিসাবে তাঁর বার্ষিক আয় বেড়েছে ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ১২৩ টাকা। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৯৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৫ টাকার।

সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট) আসনের সাংসদ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সেলিম উদ্দিন। এবারের হলফনামা অনুযায়ী তাঁর বার্ষিক আয় ২৫ লাখ ২৯ হাজার ৯০৪ টাকা। অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ১৯ টাকার। তাঁর স্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকার। এ ছাড়া রয়েছে ১ দশমিক ৫০ একর কৃষি জমি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় তিনি বার্ষিক কোনো আয় উল্লেখ করেননি। তবে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের উল্লেখ করেন। দুটি হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাঁর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৩৬৭ টাকার। তবে তাঁর ২২ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং এক একর কৃষি জমি কমেছে।