বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই

সুনামগঞ্জ-৩ আসনে (দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুর) বিএনপির দলীয় মনোনয়নের চিঠি পেয়েছিলেন লন্ডনপ্রবাসী আবদুল ছত্তার। তবে বিষয়টি স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানেন না। পরে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাও দেওয়া হয়। কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ে সেটি বাতিল হয়ে যায়। এখন এই আসনে বিএনপির আর কোনো প্রার্থী নেই।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আবদুল ছত্তার বাংলাদেশের ভোটার নয়। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

নির্বাচনী এলাকার জগন্নাথপুর উপজেলার খাগাউড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল ছত্তার আদৌ দেশে এসেছেন কি না, তিনি এখন দেশে না লন্ডনে, এ নিয়ে এলাকায় জল্পনাকল্পনা চলছে। গত দুই দিন তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ছত্তারের মুঠোফোন নম্বরটি সংগ্রহ করা যায়নি। লন্ডনে তাঁর ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে একাধিকবার সেটিতে কল করলেও রিসিভ করা হয়নি।

এলাকায় প্রচার আছে, আবদুল ছত্তার দেশেই আসেননি। তিনি লন্ডনে আছেন।

আবদুল ছত্তারের মনোনয়নপত্রে সমর্থক হিসেবে উল্লেখ আছে জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা ছাত্রদলের নেতা রয়েল আহমদের নাম। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই তাঁর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তাঁর প্রার্থী দেশেই আছেন। আবদুল ছত্তারের মুঠোফোন নম্বর চাইলে তিনি সেটি দিতে অস্বীকার করে বলেন, আবদুল ছত্তার যুক্তরাজ্য বিএনপির কোষাধ্যক্ষ। তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজন। নিরাপত্তার কারণে মোবাইল নম্বর দেওয়া যাবে না। তিনি বাংলাদেশে না লন্ডনে আছেন, এমন প্রশ্নে রয়েল আহমদ বলেন, ‘মনোনয়নপত্রে তো প্রার্থীর স্বাক্ষর লাগে। দেশে না থাকলে স্বাক্ষর কীভাবে দিলেন। আমরা এখন মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু হুরায়রা (ছাদ মাস্টার) প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির সঙ্গে আবদুল ছত্তারের কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনীতি করেন এবং সেখানেই আছেন বলে জানি।’

বিএনপির চিঠি না পেলেও ‘বিএনপির নাম করে’ আশরাফুল হক সুমন নামের একজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই–বাছাইয়ে সেটি বাদ পড়ে।

এই আসনে ২০০১ ও ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা শাহীনুর পাশা চৌধুরী ছিলেন। এই আসনের সাংসদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর ২০০৫ সালের ২০ জুলাইয়ের উপনির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হিসেবে তিনি এখানে সাংসদ নির্বাচিত হন। শাহীনুর পাশা চৌধুরী এবারও জমিয়তের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এ ছাড়া এখানে গণফোরামের প্রার্থী সাবেক যুবলীগের নেতা নজরুল ইসলাম ও বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী সৈয়দ আলী আহমদ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে শাহীনুর পাশা চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি এবারও এখানে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী, এটা দলীয়ভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

এই আসনের বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আবদুল মান্নান। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এবারও দলের মনোনয়ন পেয়েছেন।