আ.লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও পরিবেশ বিনষ্ট করার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ এলাকায় ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এই অভিযোগ অস্বীকার করে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করেছেন, এই আসনে বিএনপি দুজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। সেই কোন্দলের দায় আওয়ামী লীগের ওপর চাপানো হচ্ছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী–৪ আসনে আওয়ামী লীগের মো. মহিব্বুর রহমানসহ মোট আটজন প্রার্থী রয়েছেন। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দুজন। তাঁরা হলেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মনির।

২ ডিসেম্বর বিএনপির প্রার্থী মোশাররফ হোসেন কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. মহিব্বুর রহমানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ভোটের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট করার অভিযোগ আনেন। বিএনপির প্রার্থীর ওই অভিযোগ খণ্ডন করতে গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। তবে সেখানে মো. মহিব্বুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না। এই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পটুয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব এস এম রাকিবুল আহসান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ নাসির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম প্রমুখ।

রাকিবুল আহসান অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির মনোনীত দুই প্রার্থীর মধ্যে কোন্দল তুঙ্গে। তাঁরা পরস্পরের কর্মীদের এলাকাছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন। তা ছাড়া কোনো কোনো এলাকায় একে অপরের বিরুদ্ধে মারামারিতে লিপ্ত রয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় লালুয়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা বাজারে সম্প্রতি হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিরোধকে আওয়ামী লীগের ওপর চাপানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। বিএনপির দুই প্রার্থীর মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে এ আসনে তাঁদের কারও জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই তাঁরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর পাঁয়তারা করছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপির প্রার্থী মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কলাপাড়ার সাধারণ মানুষসহ ভোটাররা জানেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সভা করেছেন। গত ১০ বছর ছাত্রলীগ-যুবলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা টেন্ডারবাজি, দখল, সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। আজকে তারাই গোটা কলাপাড়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের সেসব অপকর্ম আড়াল করতেই উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে এসবের সঠিক জবাব ঠিকই দেবে।’ তিনি দাবি করেন, কলাপাড়ায় বিএনপির মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।

বিএনপির আরেক প্রার্থী মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, তাঁদের দুজনের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে। তবে ভোট নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। তাঁরা একসঙ্গে ভোটে কাজ করবেন।