বাড়ি পাশাপাশি, ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী

নুরুল ইসলাম ,জাকারিয়া তাহের
নুরুল ইসলাম ,জাকারিয়া তাহের

কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১ জন প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজন প্রার্থীর গ্রামের বাড়ি পাশাপাশি দুটি ইউনিয়নে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর বাড়ি একই ইউনিয়নের পাশাপাশি গ্রামে। তাঁরা নিকট অতীতে ভোটও দিয়েছেন একই কেন্দ্রে।

ওই চার প্রার্থীর মধ্যে বরুড়া উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের সোনাইমুড়ি গ্রামে বিএনপির প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক সাবেক সাংসদ জাকারিয়া তাহেরের বাড়ি। তাঁর গ্রামের পাশেই আদ্রা গ্রামে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক  সাবেক সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরীর বাড়ি। অন্যদিকে পয়ালগাছা ইউনিয়নের সুদ্রা গ্রামে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলামের বাড়ি। একই ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে বিএনপির প্রার্থী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খোন্দকার মোরতাজুল করিমের বাড়ি। আদ্রা ও পয়ালগাছা ইউনিয়ন দুটি পাশাপাশি। বিএনপির দুজনের মধ্যে দলীয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পর একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাসুদ মজুমদার বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা আঞ্চলিকতা দেখে ভোট দেন না। মার্কা দেখেই ভোট দেন। এখানকার বড় তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের কিছু গুণ রয়েছে। বরুড়ার নাগরিক সমাজ তাঁদের পছন্দ করেন। সবার মধ্যে সামাজিক সম্প্রীতি আছে। নির্বাচনে যিনি জয়লাভ করবেন, তাঁকে এই এলাকার মানুষ সাদরে গ্রহণ করে নেবেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়ার ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে কুমিল্লা-৮ আসন গঠিত।

এ আসনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৮। এবারের নির্বাচনে এ আসনে ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে তুলনামূলক প্রভাবশালী প্রার্থীদের বাড়ি উপজেলার পশ্চিম-দক্ষিণাঞ্চলে।

গত শুক্রবার আদ্রা ইউনিয়নের পেরপেটি, হেরপেটি, সোনাইমুড়ি, আদ্রা ও মন্দুক গ্রামের আটজন ভোটারের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, এলাকায় প্রার্থীদের প্রত্যেকেরই স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। এ কারণে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। কাকে রেখে কাকে ভোট দেবেন, এ নিয়ে মুশকিলে আছেন।

পয়ালগাছা গ্রামের একজন ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দলের বাইরের লোকজন চিন্তাভাবনা করেই ভোট দেবেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির তৎকালীন সাংসদ এ কে এম আবু তাহের মারা যান। এরপর এ আসনে উপনির্বাচনে বিএনপি থেকে সাংসদ হন তাঁর বড় ছেলে জাকারিয়া তাহের। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপি থেকে জাকারিয়া ও আওয়ামী লীগ থেকে নাছিমুল আলম চৌধুরী নির্বাচন করেন। জয়ী হন নাছিমুল।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ দুই নেতা প্রার্থী হননি। এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাতবার নির্বাচন করেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হন তিনি। বিএনপির  খোন্দকার মোরতাজুল করিম এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।