২০১৬ সালে বাংলাদেশে ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু

>

• গত শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ
• সরকারি, বেসরকারি ও নিজস্ব সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রতিবেদন
• সরকারি হিসাবের চেয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ গুণ বেশি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন মারা গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।

গত শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। সরকারি–বেসরকারি ও নিজস্ব সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এর আগে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে ২০১৫ সালে জাতিসংঘের এই সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০১২ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ হাজার ৩১৬ জন মারা গেছে। অর্থাৎ, চার বছরের ব্যবধানে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৬৩৮ জন। সরকারি হিসাবে, ২০১৬ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৭৬ জন। আর ২০১২ সালে মারা গেছে ২ হাজার ৫৩৮ জন। অর্থাৎ সরকারি হিসাবে চার বছরের ব্যবধানে মৃতের সংখ্যা ১৬২ জন কমেছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি হিসাবের চেয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ গুণ বেশি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, তার সব খবর পুলিশের কাছে আসে না। পুলিশও সব খবরকে গুরুত্ব দেয় না। ফলে সরকার যদি পুলিশের প্রতিবেদন ধরে মনে করে, সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু কমেছে, তাহলে সেটা ভুল পথে হাঁটা হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা খুব ছোটখাটো ধরনের। কিন্তু অবৈধ গাড়ি, অদক্ষ চালক ও সড়কে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। ফলে দুর্ঘটনা ও মৃত্যু ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সরকারের উচিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।

‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি-২০১৮’ শীর্ষক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে কোন ধরনের সড়ক দুর্ঘটনায় কত মানুষ মারা যায়, তার হিসাব পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ২০১৫ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতদের ৩২ শতাংশ পথচারী। বাস ও ট্রাকের চালক ও যাত্রী মিলিয়ে নিহত লোকের সংখ্যা ১৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মহাসড়কে গাড়ির প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ১১২ কিলোমিটার। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে গড় গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার। বাংলাদেশে মোট নিবন্ধিত গাড়ির সংখ্যা ২৮ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে মোটরগাড়ির সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।

সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ভারতে, ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯১ জন। পাকিস্তানে মৃত্যুর সংখ্যা ২৭ হাজার ৫৮২ জন।