'এমপি প্লেনোত আসিয়া চলি যায়'

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ফাইল ছবি
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ফাইল ছবি

‘হামার অ্যাটে ভোটে নাই। নাই কোনো ডামাডোল। আছে শুধু আলাপ-আলোচনা। ভোটের যে একনা গরম হাওয়া থাকবে, তাও দেখা যায়ছে না। প্রার্থীরও কোনো খবর নাই।’ ভোটের হাওয়া জানতে চাইলে আক্ষেপ করে কথাগুলো বললেন রংপুর সদর উপজেলার কুকরুল এলাকার সবজিচাষি খয়বর হোসেন।

শুধু খয়বর নন, এমন অভিব্যক্তি ওই এলাকার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরুল ইসলাম, কৃষক আনোয়ার হোসেন, আজাদ রহমান, শিক্ষক ওয়ালিউর রহমানসহ আরও অনেকের।

রংপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, বিএনপি জোটের প্রার্থী পিপলস পার্টির রিটা রহমান।

এই আসনে বিগত ১৯৯১ সাল থেকে পাঁচবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়ী হয়। এর মধ্যে তিনবারের সাংসদ এইচ এম এরশাদ, একবার তাঁর ছোট ভাই জি এম কাদের, আর একবার এরশাদের ছেড়ে দেওয়া উপনির্বাচনে এরশাদপত্নী রওশন এরশাদ।

ভোটের মাঠের হাওয়া বুঝতে গতকাল রংপুর-৩ আসনের আওতাধীন সদর উপজেলার কুকরুল, মাহিগঞ্জ, সাতমাথা, টাউন হল চত্বর, কাচারিবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ছোট ছোট আড্ডা।

বেলা ১১টার দিকে টাউন হল চত্বরের সামনের ফুটপাতে শীতের সকালের রোদে দাঁড়িয়ে চা পান করছিলেন কয়েকজন সাংস্কৃতিক কর্মী ও সংগঠক। রংপুর পদাতিকের নাট্যকর্মী রুশো আনোয়ার আক্ষেপ করে বললেন, ‘রংপুর হইল এমন একটা জায়গা, সেই ’৯১ সাল থাকি এখানকার জনগণের ভোটে যিনি নির্বাচিত হন, পরবর্তীকালে তাঁর আর দেখা পাওয়া যায় না। তারপরও হামরা ভোট দেই। নির্বাচিত করি। মনে হয় যেন ভোট দেওয়া রংপুরের মানুষের বিজয়।’

ভোটাররা অনেকেই প্রায় নিশ্চুপ। কেননা মহাজোটের প্রার্থী আবারও হয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। তিনি এখনো নির্বাচনী ময়দানে নেই।

শহরের কাচারিবাজার এলাকায় কর অফিসের পাশে সোনালি অতীত ক্লাবের সাবেক ফুটবল খেলোয়াড়েরা দল বেঁধে আড্ডায় ব্যস্ত। রংপুরে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই। তাঁদের আলোচনায় অনেকটাই জাতীয় নির্বাচন। এ সময় একজন সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় বললেন, ‘এই সরকারের আমোলত রংপুরে অনেক কিছুই হইছে। কিন্তু ভোট দেয় অন্য মানুষোক। ভোটারের মনে হয় এইটায় শান্তি। হামার এটকার (এখানকার) এমপি প্লেনোত চড়ি আসিয়া পার্টির মিটিং করিয়া চলি যায়।’