গ্যালারিতে 'নৌকা' 'নৌকা' চিৎকার শুনেছেন সাকিব

সাকিব আল হাসান, ফাইল ছবি
সাকিব আল হাসান, ফাইল ছবি

তরুণ নতুন ভোটারদের কাছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট চাইলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর অবশ্যই উন্নয়নের পক্ষে সকাল থেকে ভোট দেবেন। আমরা সবাই জানি, আমরা কাকে ভোট দেব। অবশ্যই আমরা নৌকাকে ভোট দেব।’

গতকাল রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের দিনের প্রসঙ্গ এনে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘গ্যালারির দর্শকেরা কমপক্ষে আট-দশবার নৌকা নৌকা বলে চিৎকার করেছে। আমি নিশ্চিত, সারা দেশের মানুষই এমন কাজ করবেন এবং উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখবেন।’

আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিতে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য ‘হ্যাশট্যাগ আই অ্যাম বাংলাদেশ’ বা ‘আমিই বাংলাদেশ’ (#IamBangladesh) প্রচারণার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তরুণ নতুন ভোটারদের কাছে এভাবেই নৌকা প্রতীকে ভোট চান ক্রিকেটার সাকিব। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আজ সোমবার এই অনুষ্ঠান হয়।

এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একটি অংশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় নামলেন। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন এফবিসিসিআই, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার ও পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহযোগিতায় হ্যাশট্যাগ আই অ্যাম বাংলাদেশ প্রচারণায় যুক্ত আছেন স্থগিত হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম। এ ছাড়া যুক্ত আছে অপরাজেয় বাংলা নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবীর, ঢাকা চেম্বার সভাপতি আবুল কাসেম খান, বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, অভিনেতা ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালক ফরহাদ আনোয়ার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে তরুণ-তরুণীরা অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁরা নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং অতিথিরা উত্তর দেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। সেই দিন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যার যার অবস্থান থেকে অনেক কাজ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের কোনো মন্ত্রণালয় বা কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা ব্যবসায়ী সমাজকে নিয়ে তার প্রতিবাদ করি। যেমন গত ভ্যাট আইন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছিলেন, ব্যবসায়ীমহলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ভ্যাট আইন স্থগিত করলাম। সে জন্য আমরা ব্যবসায়ীরা গর্বিত হয়েছি। আমরা সেই নেতার পেছনে থাকতে চাই, যিনি মানুষের কথা শোনেন ও মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন বোঝেন।’

বাংলাদেশের জন্য একটি সঠিক নেতৃত্ব দরকার বলে মন্তব্য করেন শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে খুজলি-পাচড়ার সংক্রমণ আছে। সেগুলো দূর করতে পারে কেবল একটি মাত্র নেতৃত্ব এবং সেটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। যেমনভাবে সিঙ্গাপুরকে বদলে দিয়েছেন লি কুয়ান ইউ এবং মালয়েশিয়াকে বদলে দিয়েছেন মাহাথির মোহাম্মদ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলব না কোন মার্কায় ভোট দেবেন। ৩০ ডিসেম্বর আপনার বিবেকের কাছে প্রশ্ন করবেন, কোন মার্কায় ভোট দিতে হবে? আপনারা অবশ্যই উন্নয়ন ও সত্যের পক্ষে ভোট দেবেন।’

তরুণদের উদ্দেশে অভিনেতা ফেরদৌস বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন বড় বড় কনসার্ট হয়, তখন রাস্তায় টিকিট হাতে তরুণদের লম্বা লাইন দেখি। গত মাসে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফোক ফেস্টে দেখছি, অনুষ্ঠানে প্রবেশের জন্য লম্বা লাইন। কমপক্ষে এক মাইল তো হবেই। ভোটের দিন সকালে যেন সেই একই দৃশ্য দেখি।’ তার আগে এক তরুণের প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌস বলেন, ‘পক্ষ এখন একটাই। আমরা সেই পক্ষেই থাকব। আমরা নৌকায় ভোট দেব।’