বাবা 'বিদ্রোহী', ছেলে স্বতন্ত্র

>

• বাশার যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য
• বাশারের ছেলের নাম ইসতিয়াক আহমেদ
• ফেনী-৩ আসনে ভোটের লড়াইয়ে বাবা-ছেলে
• বাশার পেয়েছেন আপেল প্রতীক
• ইসতিয়াক পেয়েছেন নোঙর প্রতীক

ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) আসনে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন বাবা–ছেলে। বাবা কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবুল বাশার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ছেলে ইসতিয়াক আহমেদও স্বতন্ত্র প্রার্থী।

গতকাল প্রতীক বরাদ্দের সময় আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আবুল বাশার পেয়েছেন আপেল প্রতীক। আর ইসতিয়াক পেয়েছেন নোঙর প্রতীক। বাবা–ছেলের প্রার্থী হওয়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। কে আসল প্রার্থী আর কে ‘ডামি’, তা নিয়েও চলছে আলোচনা। এবার এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির (জাপা) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। জাপার প্রেসিডিয়ামের এই সদস্য নির্বাচন করছেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে।

আবুল বাশার ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী–৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রায় ৯৩ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে প্রায় ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন বিএনপির প্রয়াত মোশাররফ হোসেন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনেও বাশার প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে পরে মহাজোটের প্রার্থী জাপার আনোয়ারুল কবীরের পক্ষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। গতবার ওই আসনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী দলের জেদ্দা শাখার সভাপতি রহিমুল্লাহ।

আবুল বাশার ও ইসতিয়াক আহম্মেদ
আবুল বাশার ও ইসতিয়াক আহম্মেদ



দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকার বিষয়ে জানতে গতকাল কয়েকবার আবুল বাশারের মুঠোফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তিনি ও তাঁর ছেলে দুজনই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকবেন। দলীয় নেতা–কর্মীদের ইচ্ছা ও মতামতের ভিত্তিতেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় অনুরোধে মহাজোটের পক্ষে জাপার প্রার্থীকে ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই প্রার্থী একপর্যায়ে মাঠ ছেড়ে দেন। এবার তিনি নির্বাচন করবেনই।

এই আসনের কয়েকজন ভোটার বলেন, সাধারণ ভোটার ও বাশারের অনেক সমর্থকের ধারণা ছিল, দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাশার হয়তো নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর ছেলেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকবেন। সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো।

দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক খান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষেই কাজ শুরু করেছেন এবং তাঁকে বিজয়ী করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া সত্ত্বেও আবুল বাশার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভুল করেছেন।

এই আসনে বিএনপির প্রার্থী দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকবর হোসেন ধানের শীষ প্রতীক পেয়েছেন। বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী বাসদের হারাধন চক্রবর্তী মই, বিএনএফের শাহরিয়ার ইকবাল টেলিভিশন, ইসলামী আন্দোলনের আবদুর রাজ্জাক হাতপাখা, ইসলামী ফ্রন্টের মো. মাঈন উদ্দিন চেয়ার ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের গোলাম হোসেন বাঘ প্রতীক পেয়েছেন।