ভোটযুদ্ধে সাতজন উত্তরসূরি

জয়া সেনগুপ্ত,রেজা কিবরিয়া,মিলাদ গাজী, খন্দকার মুক্তাদীর , এম নাসের রহমান ,এ কে আবদুল মোমেন,তাহসিনা রুশদীর
জয়া সেনগুপ্ত,রেজা কিবরিয়া,মিলাদ গাজী, খন্দকার মুক্তাদীর , এম নাসের রহমান ,এ কে আবদুল মোমেন,তাহসিনা রুশদীর

দল ও প্রতীক ছাপিয়ে তাঁদের আছে অন্য এক পরিচয়। তাঁরা প্রয়াত মন্ত্রী ও সাংসদদের উত্তরসূরি। ভোটযুদ্ধে এ রকম উত্তরসূরি হিসেবে আছেন সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সাতজন প্রার্থী। গতকাল সোমবার থেকে প্রচারণা শুরু হওয়ায় উত্তরসূরিদের নিয়ে সরব আলোচনা শুরু হয়েছে।
সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে দুই উত্তরসূরির মধ্যে সরাসরি ভোটযুদ্ধ হচ্ছে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে। এই আসনের সাবেক সাংসদ ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁর ছেলে শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী। তিনি মুখোমুখি হবেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়ার সঙ্গে। রেজা কিবরিয়া সম্প্রতি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। গণফোরাম মনোনীত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি ধানের শীষের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া সাংসদ ছিলেন হবিগঞ্জ-৩ আসনে। হবিগঞ্জ-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রসঙ্গে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘নবীগঞ্জ-বাহুবলের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক। নবীগঞ্জে দাদার বাড়ি। আর বাহুবলে দাদির বাড়ি। এ দুই উপজেলার মানুষই আমার রক্তের সম্পর্কের।’

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন কিবরিয়া। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জে গ্রেনেড হামলায় তিনি নিহত হন। আর ফরিদ গাজী টানা পাঁচবারের নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি ৪ ও ৫ নম্বর সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা ও প্রশাসনিক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রী হন। ২০১০ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি মারা যান।
বিএনপি সরকারের প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ছেলে এম নাসের রহমান লড়ছেন নিজ এলাকায় তাঁর বাবার আসনে। মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনে ১৯৯৬ সালে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন এম সাইফুর রহমান। পরবর্তীকালে ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে নিজ এলাকাসহ সিলেট-১ (মহানগর-সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে অবশ্য দুটো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান তিনি। ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন এম সাইফুর রহমান। মৌলভীবাজার-৩ আসনে লড়ছেন ছেলে নাসের রহমান।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে জয়ী হন খন্দকার আবদুল মালিক। সেবার সিলেট বিভাগের মধ্যে একমাত্র এই আসনেই ধানের শীষ প্রতীক জয়ের মুখ দেখেছিল। খন্দকার আবদুল মালিক প্রয়াত হওয়ার পর সিলেট-১ আসনে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দুটো নির্বাচন করেন এম সাইফুর রহমান। এবারই প্রথম বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে লড়ছেন খন্দকার মালিকের ছেলে খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর। এই আসনে তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভোটের রাজনীতির আরও এক উত্তরাধিকার এ কে আবদুল মোমেন। তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন মোমেন। এ দুজনের প্রচারণায় একদিকে সাবেক সাংসদ খন্দকার মালিক, আরেক দিকে আছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নাম।
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের সাবেক সাংসদ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে ‘নিখোঁজ’। তাহসিনা রুশদীর বলেন, ‘নির্বাচন আমার কাছে নতুন কোনো বিষয় নয়। এর আগেও আমি স্বামীর সঙ্গে নির্বাচনের মাঠে থেকেছি। এ ছাড়া আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি করেছি। নেতা-কর্মীদের চাওয়ার কারণেই প্রার্থী হওয়া।’
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে উত্তরসূরি হিসেবে আছেন প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত। গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি সুরঞ্জিত মারা যান। ওই বছরের ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে জয়া সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী।