বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ ঢাকায় গ্রেপ্তার ৬১

নাশকতার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
নাশকতার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

নাশকতার পুরোনো মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল আলীম নকিসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৬১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও আদালত সূত্র বলছে, নাশকতার মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফুর রহমান আশরাফসহ (৫২) আটজন নেতা-কর্মীকে সোমবার গ্রেপ্তার করে মিরপুর থানা-পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে হাজির করে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। আদালত এসব আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেন।

পুলিশ সূত্র বলছে, বনানী থানার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার আলম নকিকে আদালতে হাজির করে দশ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বনানী থানার মহাখালী এবিসি প্লাজা নামের পরিত্যক্ত ভবনের সামনে বিএনপি ও জামায়াতের উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করেন। রাস্তায় গাড়ির ভাঙা কাচের টুকরা, বাঁশের লাঠি, ইটের টুকরো পড়ে ছিল। লোকজন আতঙ্কে ছোটাছুটি করছিল। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য বিএনপির নেতা-কর্মীরা ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে সেখানে একত্র হয়েছিলেন।

রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, মামলার এজাহারে নাম থাকা পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ঢাকা মহানগর বিএনপির (উত্তর) সহসভাপতি আবদুল আলীম নকির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকার বিভাগীয় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা মহানগরের ১৫টি আসনে ১৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সোমবার প্রার্থীদের কাছে প্রতীক হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু করেছেন প্রার্থীরা।

পুলিশ, আইনজীবী এবং আদালত সূত্র বলছে, নাশকতার পুরোনো মামলায় শাহবাগ, রমনা, বাড্ডা, ভাটারা, গুলশান, বনানী, মিরপুর, শেরেবাংলা নগর, তেজগাঁও, হাতিরঝিল, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, রূপনগর, কাফরুল, পল্টন, মতিঝিল, শাহজাহানপুর, রামপুরা, সবুজবাগ, যাত্রাবাড়ী, চকবাজার, কামরাঙ্গীরচর, দারুস সালাম, উত্তরা-পূর্বখান এবং দক্ষিণখান থানা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৬১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

নাশকতার মামলায় আসামি গ্রেপ্তার করে মিরপুর থানা-পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, বিএনপি নেতা আশরাফুর রহমান আশরাফ মিরপুরের শাহ আলীবাগ এলাকায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। গত ১৩ সেপ্টেম্বর শাহ আলীবাগের রাস্তার সামনে আসামিরা বিস্ফোরক দ্রব্যসহ ককটেল নিয়ে একত্র হন। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা মিরপুর মডেল থানাসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অন্তর্ঘাত ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য বিপুল পরিমাণ ককটেল বোমা নিজেদের হেফাজতে রেখে পরিকল্পনা করে আসছেন। এ ছাড়া মিরপুর থানার বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় বিএনপি নেতা ওয়াজ উদ্দিন মিয়াকে (৫৩) গ্রেপ্তার করা হয়।