বাবার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে প্রচারে মহিবুল হাসান

গণসংযোগ করতে খাতুনগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এ সময় আমানত শাহ মাজার থেকে ফিরছিলেন চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান (ডানে)। পথে হঠাৎ দেখা হয়ে যাওয়ার পর কুশল বিনিময় করেন তাঁরা। গতকাল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে জেল রোডে।  সৌরভ দাশ
গণসংযোগ করতে খাতুনগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এ সময় আমানত শাহ মাজার থেকে ফিরছিলেন চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান (ডানে)। পথে হঠাৎ দেখা হয়ে যাওয়ার পর কুশল বিনিময় করেন তাঁরা। গতকাল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে জেল রোডে। সৌরভ দাশ

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ভোটের মাঠে সব সময় বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিতেন। তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিগত সখ্য থাকলেও কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু নির্মাণসহ নানা ইস্যুতে মহিউদ্দিন চৌধুরী নোমানের বিরুদ্ধে মাঠ গরম করেছিলেন। চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিনপুত্র মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গতকাল মঙ্গলবার প্রথম প্রচারণায় নেমে দেখা পেয়ে গেলেন বাবার রাজনৈতিক বন্ধু নোমানের।

আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী। দুপুর ১২টার দিকে নগরের জেল রোডের আমানত শাহ মাজার জিয়ারত করে বের হচ্ছিলেন নোমান। তখন একই পথ দিয়ে বকশিরহাট এলাকায় গণসংযোগে যাচ্ছিলেন নওফেল। জ্যেষ্ঠ নেতা নোমানকে দেখে নওফেল গাড়ি থেকে নেমে সালাম দিয়ে এগিয়ে যান। কোলাকুলি করে কুশল বিনিময় করেন। নওফেলের গায়ে হাত বুলিয়ে দোয়া করেন নোমান।

শুধু প্রতিপক্ষ দলের বাবার সহযোগী নয়, নওফেল গতকাল প্রচারণার সময় আশপাশে যাঁদের পেয়েছেন তাঁরাও মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং সহযোদ্ধা। কে সি দে সড়কে স্থাপিত নির্বাচনী কার্যালয় থেকে গতকাল সকাল ১০টায় নির্বাচনী প্রচারকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন নওফেল। এখানে ১৯৯৪ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীও মেয়র নির্বাচন উপলক্ষে কার্যালয় খুলেছিলেন।

নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন (বাবুল) আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ‘একসময় মহিউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে এখান থেকে প্রচারণা শুরু করেছিলাম। আজ তাঁর ছেলের পক্ষে আমরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছি।’

নির্বাচনী কার্যালয়ে যাওয়ার আগে সকাল নয়টায় নওফেল নেতা–কর্মীসহ যান আমানত শাহ মাজারে। এরপর তিনি কার্যালয়ে এসে সংক্ষিপ্ত সভায় মিলিত হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাজনীতি করা সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।

এ সময় নওফেল বলেন, ‘আমার জন্য নয়, শেখ হাসিনার জন্য ভোট চাইতে হবে।’

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সকলকে সুশৃঙ্খল থাকতে হবে। শুধু প্রার্থীর সঙ্গে ঘুরলে হবে না। নিজেদেরও প্রার্থীর জন্য ভোট চাইতে হবে।

এরপর বাবার কবর জিয়ারত শেষে দুপুরে বকশিরহাট, আছদগঞ্জ এবং খাতুনগঞ্জ এলাকায় গণসংযোগ করেন নওফেল। এ সময় ব্যবসায়ীরা দোকান থেকে বের হয়ে আসেন।

নুরুল আলম চৌধুরী নামে আছদগঞ্জের এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘তাঁকে (নওফেল) দেখেছি অনেক ছোট। আমি তাঁর বাবার সঙ্গে রাজনীতি করেছি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে তাঁর মতোই হবে।’

নওফেলের বিপক্ষে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী নোমানের একসময়ের অনুসারী নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন। তিনি এখন কারাগারে। বিএনপির এই নেতার নির্বাচনী প্রচারণার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় বিকেলে নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে। এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কারাগারে আটকে রেখেও জয় ঠেকানো যাবে না। সব নেতা–কর্মীকে শাহাদাতের পক্ষে কাজ করতে হবে।

চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপির প্রার্থী আমীর খসরু সকালে ছোটপুল এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মী অংশ নেন। এ প্রসঙ্গ টেনে আমীর খসরু বলেন, তিন দিন ধরে হালিশহর ছোটপুল এলাকায় পুলিশ তাণ্ডব চালিয়েছে। তবু আজ গণসংযোগে মানুষের স্রোত থামাতে পারেনি।