ব্যবসা থেকে আয় নেই ব্যবসায়ী মোজাফ্ফরের

মোজাফফর
মোজাফফর

জামালপুর-৫ (সদর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মোজাফ্ফর হোসেন ব্যবসায়ী হলেও ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় এক টাকাও নেই। তবে চাকরি থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

মোজাফ্ফর হোসেন পেশার বিবরণী ঘরে ব্যবসা লিখেছেন। ব্যবসা হিসেবে তিনি লিখেছেন ‘১০০ শতাংশ রপ্তানিকারী উৎপাদনশীল বস্ত্র প্রতিষ্ঠান’। কিন্তু এই ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক এক টাকাও আয় নেই। তবে তিনি একজন ব্যবসায়ী হিসেবেই নির্বাচনী এলাকায় পরিচিত।

মো. মোজাফ্ফর হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। জামালপুর-৫ (সদর) আসন থেকে নৌকার প্রতীক নিয়ে তিনি নতুন মুখ হিসেবে এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া মোজাফ্ফর হোসেনের হলফনামা থেকে জানা গেছে, তাঁর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এবং বল্ড ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ খাত মিলে তাঁর ৫ কোটি ৬৯ লাখ ৪১ হাজার ৮৮৬ টাকা রয়েছে। একই ধরনের তিনটি খাত থেকে তাঁর স্ত্রীর রয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩০ টাকা। এর মধ্যে তাঁর নগদ টাকা ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৬ টাকা এবং তাঁর স্ত্রীর নামে নগদ ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৩৪ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ তাঁর নামে ৮ লাখ ২৭ হাজার ৮৫০ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬৪৬ টাকা, বল্ড ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ খাতে তাঁর নামে ৫ কোটি ৪৫ লাখ ৬৮ হাজার ১২০ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ২ কোটি ৯৯ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫০ টাকা, ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকায় একটি গাড়ি, স্বর্ণ ২৫ ভরি ও তাঁর স্ত্রীর নামে ৫ ভরি, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এসি ও টিভি এবং তাঁর স্ত্রীর নামে ল্যাপটপ, টিভি ও ফ্রিজ, আসবাবের মধ্যে খাট ও ওয়ার্ডরোবসহ ইত্যাদি, ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম ২০ লাখ ২১ হাজার ৬৯৬ টাকা রয়েছে।

তাঁর হলফনামা থেকে আরও জানা যায়, কৃষি খাতে তাঁর কোনো আয় নেই, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকানভাড়া থেকেও তাঁর কোনো আয় নেই। তবে ব্যাংক আমনত থেকে সুদ পান ১৭ হাজার ৬৩৭ টাকা, চাকরি থেকে পরিচালক হিসেবে (পারিতোষিক) ভাতা পান ২৪ লাখ ৬০ হাজার, বোর্ড মিটিংয়ে অংশগ্রহণ বাবদ তাঁর আয় ৪০ হাজার টাকা।

মোজাফ্ফর হোসেনের স্থাবর সম্পদের মধ্যে অকৃষিজমি ১৫৯৭ দশমিক ৭১১ শতাংশ, যার মূল ধরা হয়েছে ৭১ লাখ ২৩ হাজার ৪৫৪ টাকা এবং তাঁর স্ত্রীর নামে ১৮৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যার মূল ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট আছে একটি, যার আর্থিক মূল্য ধরা হয়েছে ৩২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তবে তাঁর নিজের নামে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট নেই।

প্রার্থীদের হলফনামার বিষয়ে জানতে চাইলে এলাকার কয়েকজন ভোটার নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে ততটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবু প্রার্থীদের হলফনামা দেখে আমরা তাঁদের সম্পর্কে কিছুটা আন্দাজ করতে পারি।’