সংঘাত, সহিংসা দিয়ে শুরু নির্বাচনী প্রচারণা

একাদশ সংসদ নির্বাচন
একাদশ সংসদ নির্বাচন

নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হতেই পোস্টার লাগাতে বাধা দেওয়া, ছিঁড়ে ফেলা—এ রকম তৎপরতার মধ্যদিয়ে রাজশাহী-৬ (চারঘাট–বাঘা) আসনের চারঘাট উপজেলা এলাকায় নির্বাচনী পরিবেশ সহিংস হয়ে উঠেছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে ও রাতে হামলা, পাল্টা হামলায় নয়জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন নৌকার ও চারজন ধানের শীষের সমর্থক। গুরুতর আহত অবস্থায় নৌকার চার সমর্থককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় চারঘাট থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ধানের শীষের তিন সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে চারঘাটের বামনদিঘা গ্রামে ধানের শীষের সমর্থকেরা পোস্টার টাঙাতে গেলে আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা বাধা দেন। পরে ওই দিন রাতেই আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা বামনদিঘা উত্তরপাড়ায় পোস্টার টাঙাতে গেলে বিএনপি সমর্থকেরা বাধা দেন। এতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে দুপক্ষের ছয়জন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা হলেন ছাত্রলীগের অপু হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, বিপুল হোসেন ও কৃষক লীগের মো. সাহাবুল। এঁদের সবাইকে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবারও তাঁরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একই ঘটনায় আহত হন ধানের শীষের দুই সমর্থক। এঁরা হলেন সজল ও সাব্বির। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে হামলার ঘটনায় পুলিশ ধানের শীষের তিন সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে।
শলুয়া কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি অপু হোসেন বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে বামনদিঘা উত্তরপাড়া গ্রামে নৌকা প্রতীকের পোস্টার লাগাতে গেলে বিএনপির নেতা–কর্মী বাধা দেন। একপর্যায়ে হাতাহাতি হলে পেছন থেকে অর্তকিতভাবে তাঁদের ওপর হাতুড়ি–লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়।
এর আগে গতকাল বিকেলে বনকিশোর গ্রামের ফরিদপুর মোড়ে পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা হলেন আওয়ামী লীগের জাহিদুল হাসান এবং বিএনপির ইব্রাহিম খলিল ও কামরুল ইসলাম। আহত ব্যক্তিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এসব সহিংসতার ব্যাপারে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগাতে গিয়ে হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে। তবে শুধু মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় ধানের শীষের তিন সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর মঙ্গলবার বিকেলে বনকিশোর গ্রামে সংঘর্ষের কথা শুনে পুলিশ যেতেই স্থানীয় লোকজন নিজেদের মধ্যে তা মিটমাট করে ফেলেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ ব্যাপারে ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ইউনুস আলী তালুকদার বলেন, রাতের অন্ধকারে কে, কাকে, কীভাবে মেরেছে; তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এখন আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপির ওপর দোষ চাপাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, প্রকৃতপক্ষে বিএনপিই সব জায়গায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম বলেন, চারঘাটে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তাঁরা যথেষ্ট আন্তরিক। একটা ভুল–বোঝাবুঝি থেকে এটা হয়েছে। আর যাতে না হয়, সে জন্য তাঁরা সচেষ্ট আছেন।