খসরুর গণসংযোগে বাধা

গণসংযোগ করার সময় গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বাধা দিয়েছেন ছাত্রলীগের কিছু কর্মী-সমর্থক। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। প্রায় এক মিনিটের এই সংঘর্ষে বিএনপির দুই কর্মী আহত হয়েছেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এই ঘটনায় ছাত্রলীগের চিহ্নিত কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঘটনাটি বড় নয় বলে পুলিশ দাবি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম নগরের পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-বন্দর) আসনে বিএনপির প্রার্থী। পূর্ব মাদারবাড়ি চট্টগ্রাম-১১ আসনের অন্তর্গত। আমীর খসরুর সঙ্গে শ দেড়েক নেতা-কর্মী ছিলেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা নির্বিঘ্নে গণসংযোগ চালিয়েছেন আমীর খসরু। এরপর বিপত্তি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, গতকাল পূর্ব মাদারবাড়ির সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে আমীর খসরু গণসংযোগ করছিলেন। হঠাৎ ৪০-৪৫ যুবক পেছনের দিক থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করার চেষ্টা করেন। বেশির ভাগ যুবকের হাতে লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিক দেখা গেছে। কিন্তু তাঁদের ধাওয়ায় বিএনপির কেউ নড়াচড়া করেননি। যে যেখানে ছিলেন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। এতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও থমকে দাঁড়ান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, একপর্যায়ে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে ছাত্রলীগের হাতাহাতি হয়। হাতাহাতি সংঘর্ষের পর্যায়ে চলে যায়। এতে বিএনপি কর্মী রাজিবুল হাসান এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী টিটু আহত হন। পরিস্থিতি বেশি দূর গড়ানোর আগে আমীর খসরু ছাত্রলীগের মারমুখী কর্মীদের মুখোমুখি হন। এ সময় খসরু উত্তেজিত যুবকদের জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমাদের প্রবলেম (সমস্যা) কী? আমাকে বলো।’ ছাত্রলীগের কর্মীরা তখন বিএনপির দুই-এক কর্মীর নাম ধরে তাঁদের ব্যাপারে আপত্তির কথা জানান।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান ছিল। আমরা প্রতিপক্ষের নেতাদের শ্রদ্ধা করে আসছি। কখনো কারওর গণসংযোগ বা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীরা বাধা দেয়নি কিংবা হামলা চালায়নি। এটা চট্টগ্রামের সংস্কৃতি। কিন্তু মাদারবাড়ি এলাকায় দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের হামলায় আমাদের কিছু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’
খসরু বলেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা আদালতে মামলা করবেন। ছাত্রলীগের রনি ও অভির নেতৃত্বে এই কাণ্ড ঘটে। কিন্তু লাঠিসোঁটা হাতে থাকা যুবকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কিংবা গণসংযোগে নিরাপত্তায় পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি বলে খসরু অভিযোগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরিস্থিতি শান্ত হলে গতকাল বেলা পৌনে দুইটার দিকে আমীর খসরুর নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গণসংযোগ করতে চলে যান কদমতলীর দিকে। আর সরকার সমর্থক যুবকেরা ‘নৌকা, নৌকা’ বলে ইসলামিয়া কলেজের দিকে চলে যান।
সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, বিএনপির প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিজের গণসংযোগ করছিলেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও আলাদাভাবে নৌকার পক্ষে গণসংযোগ করছিলেন। দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়েছিল। তখন আমীর খসরু ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।