সরে দাঁড়ালেন রওশন, এবার ভোটযুদ্ধে আ.লীগ-বিএনপি

রুহুল আমিন মাদানী ও মাহবুবুর রহমান
রুহুল আমিন মাদানী ও মাহবুবুর রহমান

ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ। একই সঙ্গে তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ত্রিশাল আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফেজ রুহুল আমিন মাদানীকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে ত্রিশাল আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর ভোটযুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা।

গত বুধবার বিকেলে রওশন এরশাদ ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ত্রিশাল আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী হাফেজ রুহুল আমিন মাদানীকে সমর্থন দিয়ে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। সরে দাঁড়ানোর আগে ত্রিশাল আসনে মনোনয়নপত্র জমা ও প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।

রওশন এরশাদ ময়মনসিংহ-৪ (সদর) ও ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। স্থানীয় একটি সূত্রের ভাষ্য, সদরে মহাজোটের একক প্রার্থী হওয়ায় সেখানে আওয়ামী লীগের ভোট ও কর্মীদের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু ত্রিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকায় এই সুবিধা নেই। এককভাবে জাপার কর্মী নিয়ে নির্বাচন করা কঠিন হবে—এমন আশঙ্কা থেকেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র রওশন এরশাদের চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পর থেকে ত্রিশাল আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ ও দুই দলের নেতা-কর্মীরা।

ত্রিশাল আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রুহুল আমিন মাদানী ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে মাদানীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ায় এখানে নেতা-কর্মীদের মধ্যে একধরনের উৎসাহের সৃষ্টি হয়। তবে শেষ মুহূর্তে রওশন এরশাদ এই আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। ত্রিশাল আসনে বর্তমান সাংসদ জাপার এম এ হান্নান মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন।

রাহুল আমিন মাদানী ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাঁরা মনে করছেন, বুধবার রওশন এরশাদ সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় আওয়ামী লীগের জয় অনেকটা নিশ্চিত।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে শেষ পর্যন্ত নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়। এতে দলে কিছুটা হলেও হতাশা ছিল। তবে গত দুই দিনে নেতা-কর্মীরা দলের মনোনীত প্রার্থী মাহবুবুর রহমান লিটনের পক্ষে প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার মাহবুবুর রহমান স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রার্থী নিয়ে যেটা হয়েছে, সেটা বাছাই-প্রক্রিয়ার অংশ। এটা দলের প্রত্যেকেই স্বাভাবিকভাবে নিয়েছে। দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নিয়েই বিএনপি নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে।

ত্রিশাল আসনে প্রথমে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন ত্রিশাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। শেষ মুহূর্তে প্রার্থী পরিবর্তন করে মাহবুবুর রহমানকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি।