বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত ঝুলে আছেন ১০ মামলায়

শাহাদাত হোসেন
শাহাদাত হোসেন

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি। ৩৬ দিন ধরে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। নাশকতার অভিযোগে শাহাদাতের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪০টি। এর মধ্যে ৩০টিতে জামিন হলেও ১০টিতে এখনো জামিন পাননি। ভোটের আগে তিনি মুক্তি পান কি না শঙ্কায় রয়েছেন নেতা-কর্মীরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই সপ্তাহ।

আদালত সূত্র জানায়, গত ২৬ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬ দিনে শাহাদাত হোসেনকে নাশকতার অভিযোগে ১১ মামলায় গ্রেপ্তার দেখান আদালত। এর মধ্যে একটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া ১০ মামলায় জামিনের জন্য আদেশের অনুলিপি নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেছেন তাঁর আইনজীবী। সাতটি মামলায় জামিন শুনানির জন্য আগামী ১৭ ও ২০ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। বাকি তিনটির তারিখ এখনো পড়েনি। সেখানে নামঞ্জুর হলে আদেশের অনুলিপি নিয়ে তাঁকে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করতে হবে।

অবকাশকালীন ছুটির কারণে ১ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম আদালত বন্ধ রয়েছে। ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের কার্যক্রম অবকাশকালীন বেঞ্চ হিসেবে চালু থাকবে। সাপ্তাহিক ছুটি ও বিজয় দিবসের বন্ধের কারণে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার দিন খোলা থাকবে মহানগর দায়রা জজ আদালত। এই চার দিনের মধ্যে সেখানে ১০টি মামলার শুনানি হতে হবে।

এদিকে অবকাশকালীন বন্ধের কারণে হাইকোর্ট ১৯ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে অবকাশকালীন বেঞ্চ থাকবে। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর হাইকোর্টে যেতে হবে।

শাহাদাতের আইনজীবী আহমদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী সাজ্জাদ প্রথম আলোকে বলেন, রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে শাহাদাতকে একের পর এক ‘গায়েবি’ মামলায় আসামি করেছে পুলিশ। ১০টি মামলায় তাঁর জামিন হাকিম আদালতে নামঞ্জুর হওয়ায় মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করা হয়েছে। সেখানে নাকচ হলে হাইকোর্টে আবেদন করা হবে। কিন্তু ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মহানগর দায়রা জজ খোলা থাকবে। হাইকোর্ট ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে। এরপর অবকাশকালীন বেঞ্চে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত মাত্র চারটি কার্যদিবস পাওয়া যাবে। চট্টগ্রামে নামঞ্জুর হওয়ার আদেশের অনুলিপি এই সময়ের মধ্যে পাওয়া যাবে না। এতে বোঝা যায় জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ এই পর্যন্ত নাশকতার কোনো মামলার আসামির জামিন মঞ্জুর হয়নি চট্টগ্রামে।

চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ককটেল বিস্ফোরণ, জনমনে ভীতি সঞ্চার ও নাশকতার মামলার কোনো আসামির জামিনের আবেদন করা হলে দেশে শান্তি–শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিরোধিতা করা হবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২১ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪ দিনে শাহাদাতের বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা করে পুলিশ। এর মধ্যে কোতোয়ালি ও বাকলিয়া থানায় তিনটি করে ছয়টি, সদরঘাট, বায়েজিদ বোস্তামী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও চকবাজার থানায় একটি করে পাঁচটি মামলা হয়। সবগুলো মামলার এজাহার অভিন্ন। শুধু ঘটনার সময় ও তারিখ ভিন্ন। সব কটি মামলা এখনো তদন্তাধীন রয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী প্রথম আলোকে বলেন, অন্তত নির্বাচনের আগে শাহাদাত হোসেন বের হতে পারলে ভোট চাইতে পারতেন। এখন তাঁর পক্ষে হয়ে অন্য নেতারা প্রচারণা চালাচ্ছেন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দিনরাত প্রচারণা চালাচ্ছেন।