নিজ দলের সাবেক দুই নেতার সঙ্গে লড়াই

হাসান ইমাম খান, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, লিয়াকত আলী
হাসান ইমাম খান, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, লিয়াকত আলী

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ হাসান ইমাম খানকে এবার লড়তে হচ্ছে তাঁর নিজ দলের সাবেক দুই নেতার সঙ্গে। এঁরা দুজন হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের পদত্যাগী সহসভাপতি মো. লিয়াকত আলী। ফলে এ আসনের নির্বাচন ত্রিমুখী লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে।

কালিহাতী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে ১৯৭০, ১৯৭৩, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকী। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত ও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।

লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগের পর শূন্য এই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের হাসান ইমাম খান সাংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই উপজেলা আওয়ামী লীগ তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এবারের নির্বাচনে হাসান ইমাম ছাড়াও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবু নাসের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি লিয়াকত আলী মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাঁরা তিনজনেই এককাট্টা ছিলেন হাসান ইমাম খানের বিরুদ্ধে।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, লতিফ সিদ্দিকী দীর্ঘদিন এ আসনে সাংসদ থাকায় দলের মধ্যে তাঁর প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। সেই প্রভাবকে পুঁজি করেই তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা–কর্মী তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। লতিফ সিদ্দিকী জানান, তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের বাইরে মনে করেন না। দলের নেতা–কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্যই তিনি প্রার্থী হয়েছেন।

হাসান ইমাম খানের পক্ষে গতকাল শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনি নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দলের সব নেতা–কর্মীর প্রতি আহ্বান জানান। সভায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, যাঁরা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান। সভায় জেলা ও কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা লিয়াকত আলী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছেন। লিয়াকত আলী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে দল থেকে পদত্যাগ করে কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগ দেন। পরে তিনি সেই দল থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন। লিয়াকত আলী জানান, লতিফ সিদ্দিকী প্রার্থী হওয়ায় নৌকার সমর্থকেরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছেন। কিন্তু ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যফ্রন্টের সবাই ঐক্যবদ্ধ। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিজয়ী হবেন।