বাসা থেকে বিএনপির প্রার্থীর স্ত্রী আটক

ঢাকা-১৬ আসনের বিএনপির প্রার্থী আহসান উল্লাহর স্ত্রী রিনা হাসানকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে রিনাকে মিরপুর ৬ নম্বরের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় পল্লবী থানার পুলিশ। এ ছাড়া প্রচারণায় নেমে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের পিটুনিতে আহত হয়েছেন বিএনপির অন্তত ১৫ জন নারী কর্মী।

ঢাকার উত্তরের সীমান্তবর্তী মিরপুরের পল্লবী ও রূপনগর থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৬ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ।

বিএনপির কর্মীরা বলেন, গতকাল বিকেলে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ডি ব্লকের ১৬ নম্বর সড়কে তাঁরা নির্বাচনী লিফলেট বিতরণ করছিলেন। অদূরেই ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর নির্বাচনী কার্যালয়। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা সেখান থেকে বেরিয়ে বিএনপির কর্মীদের ওপর হামলা চালান।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, আহসান উল্লাহর স্ত্রী রিনা হাসানের নেতৃত্বে শতাধিক নারী কর্মী লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা অতর্কিত তাঁদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা তখন আশপাশের বাড়িঘরে আশ্রয় নেন। পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হলেও এ ক্ষেত্রে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বিএনপির প্রার্থী আহসান উল্লাহ হাসান জানান, হামলার কিছুক্ষণ পর ১৩ নম্বর সড়কের বাসভবন থেকে তাঁর স্ত্রী রিনা হাসান, শ্যালিকা রুমানা আক্তারসহ আরেক স্বজনকে আটক করে নিয়ে যায় পল্লবী থানার পুলিশ।

হামলার ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এই প্রতিবেদক দেখতে পান, সেখানে প্রচুরসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়ে আছে। কাছাকাছি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভিড় করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। এ সময় ১৮ নম্বর সড়ক থেকে যুবলীগের একটা মিছিল এগিয়ে আসতে দেখা যায়। মিছিলকারী ব্যক্তিরা হঠাৎ ফুটপাতে অবস্থানরত মেরুন রঙের গেঞ্জি পরা এক যুবকের ওপর চড়াও হন। ওই যুবক মুঠোফোনে মিছিলের ছবি তুলছিলেন। যুবককে মারধরের সময় আশপাশের ভবন থেকে ওই দৃশ্য দেখতে থাকা কৌতূহলী ব্যক্তিদের সরে যাওয়ার জন্য শাসান মিছিলকারীরা। এ সময় তাঁদের কয়েকজনের হাতে জিআই পাইপ, হকিস্টিকসহ ধারালো অস্ত্র দেখা যায়।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। রাত নয়টার দিকে যোগাযোগ করা হলে থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপরিদর্শক ফারুকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, রিনা হাসানের নামে একাধিক মামলা আছে। তাঁকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

আহসান উল্লাহ হাসান বলেন, ‘এই অত্যাচারের কোনো সীমা নেই। কোনো মিছিল নয়, স্লোগান নয়, তাঁরা কেবল লিফলেট বিতরণ করছিলেন। মারধরের পর আমার স্ত্রীসহ কয়েকজন কর্মী বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এ অবস্থায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ আমার স্ত্রী, শ্যালিকা ও খালাতো বোনকে তুলে নিয়ে যায়।’