বিজয়ের প্রথম প্রহরে আতশবাজিতে উদ্ভাসিত টিএসসি

বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে টিএসসিতে আতশবাজি ফোটানো হয়। ছবি: আসিফ হিমাদ্রি
বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে টিএসসিতে আতশবাজি ফোটানো হয়। ছবি: আসিফ হিমাদ্রি

কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নয়, একটা দেশ কিছুক্ষণের মধ্যে পা দেবে ৪৭ বছরে। উদ্‌যাপনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। মানুষে গিজগিজ করছে চারপাশে। সবার চোখে-মুখে বিজয়ের রং। সবার অভিন্ন অপেক্ষা, কখন পৃথিবী প্রবেশ করবে ১৬ ডিসেম্বরের প্রথম প্রহরে! ঘড়ির কাঁটায় ১২টা ১ মিনিটে আসতেই আতশবাজির গুচ্ছ আলো আর শব্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল পুরো এলাকা। এ যেন নতুন এক জন্ম কিংবা জাগরণ।

মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে আতশবাজি ফোটানোসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্‌যাপন শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। উদ্‌যাপনে যোগ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে।

প্রতিবছরের মতো এবারও রাত ১২টা ১ মিনিটে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আতশবাজি ফুটিয়ে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতায় অনন্য মাত্রা যোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্লোগান-৭১। ১১টা ৪৫ মিনিটে টিএসসি প্রাঙ্গণে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়।

টিএসসিভিত্তিক সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে চলছে বিজয় উৎসব ‘রক্তে রাঙা বিজয় আমার-২০১৮’ ৷ গত শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান ও শোক সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এই উৎসব শেষ হবে আজ রোববার। এই উৎসবের অংশ হিসেবেই বিজয়ের প্রথম প্রহরে ফোটানো হয় আতশবাজি, ওড়ানো হয় ফানুস।

বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে টিএসসিতে আতশবাজি ফোটানো হয়। ছবি: আসিফ হিমাদ্রি
বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে টিএসসিতে আতশবাজি ফোটানো হয়। ছবি: আসিফ হিমাদ্রি

বনশ্রী থেকে উদ্‌যাপনে যোগ দিতে টিএসসিতে আসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রোমানা আফরোজ ৷ রোমানা বলেন, বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে টিএসসির এই আয়োজনে তিনি আগেও এসেছেন ৷ টিএসসির আয়োজন অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে আলাদা ও স্বতন্ত্র ৷ এই আয়োজন বিজয়ের আনন্দে আলাদা একটা মাত্রা যোগ করে ৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে আজ রোববার বিজয় দিবসে টিএসসির করিডরে ‘একটি মানচিত্রের জন্ম’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে আছে সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জমায়েত এবং সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশ্যে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাত্রা ৷ এ ছাড়া টিএসসিতে রয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ছায়ানটের যৌথ উদ্যোগে বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে সংগীতানুষ্ঠান। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হবে এই অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে টিএসসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল, মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।