সিইসির বিরুদ্ধে 'আঁতাতের' অভিযোগ স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর

সারদা সুন্দরী বালিকা বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ফরিদপুর, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: প্রবীর কান্তি বালা
সারদা সুন্দরী বালিকা বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ফরিদপুর, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: প্রবীর কান্তি বালা

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির প্রার্থী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের ‘বিশেষ গোপন আঁতাতের’ অভিযোগ এনেছেন এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

আজ রোববার ফরিদপুর শহরে এক নির্বাচনী সভায় এ অভিযোগ করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোশাররফ। শহরের গোয়ালচামট এলাকার সারদা সুন্দরী বালিকা বিদ্যালয় মাঠে ওই নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ জনপ্রিয়তা হারিয়ে ভালো-মন্দ বোধশূন্য হয়ে পড়েছেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় নেতা-কর্মী বা জনগণের কোনো অংশগ্রহণ নেই। তাই তিনি পাগলের প্রলাপ বকা শুরু করেছেন।

এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে কামাল ইউসুফ নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা সৃষ্টির মিথ্যা অভিযোগ করছেন। কমিশন থেকে আমার কাছে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমি বলেছি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কাউকে বাধা দিচ্ছে না। কামাল ইউসুফ জয় বাংলা স্লোগান শুনে ভয় পেয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, কামাল ইউসুফ নির্বাচন থেকে নিজে সরে যাওয়ার অজুহাত খুঁজছেন। তাই নির্বাচন কমিশনে তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন। অভিযোগ পেয়ে সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর নির্বাচন কমিশন থেকে আমার কাছে ফোন করে জানতে চাওয়া হয়।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য যখন আমি সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে ফোন করি। তখন তিনি আমার ফোন ধরেন না। এমনকি ভদ্রতা বা সৌজন্যবশত আমাকে ফিরতি ফোনও করেননি।’ তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘এটা কি নির্বাচন কমিশনের স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্ব নয়? ওদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নিশ্চয়ই কোনো বিশেষ গোপন আঁতাত আছে। তাই আমার ফোন ধরেন না। নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। তিনি এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না।’
ওই নির্বাচনী সভায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘আমি গোপনে এ অভিযোগ করছি না। প্রকাশ্যেই এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এ অভিযোগ করছি। আপনারা (সাংবাদিক) এ কথাগুলো পত্রিকায় ছাপান।’
ওই নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সার্বিক উন্নয়নের কারণে মানুষ আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে চায়। ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভোটের লড়াই থেকে বিএনপি পালানোর পথ খুঁজছে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপির আমলে এক কেজি কাঁচা মরিচ নিয়ে কেউ বাজার থেকে বাড়ি যেতে পারতেন না। কিন্তু এখন এই জনপদে কোনো সন্ত্রাসী নেই। শান্তির জনপদে পরিণত হয়েছে। এটা ওদের সহ্য হচ্ছে না। ওরা এই শান্ত জনপদকে অশান্ত করতে চায়। কিন্তু মানুষ আর কোনো ভুল করবেন না। পাল্টা জবাব দেবে। পালিয়েও পার পাবেন না। জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের সব ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল হকের সভাপতিত্বে এ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভী, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী বরকত ইবনে সালাম, পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু, গোলাম মো. নাসির প্রমুখ।
পরে মন্ত্রী শহরের জোহরা বেগম উচ্চবিদ্যালয় মাঠ, কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মাধবপুর, মাচ্চর ইউনিয়নের পরানপুর এবং শহরের আলীপুর এলাকার উদয়ন সংঘ মাঠে নির্বাচনী সভা ও প্রচারণায় অংশ নেন।