হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না: ড. কামাল

ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: সাজিদ হোসেন
ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন। ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: সাজিদ হোসেন

ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। আজ রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল এ কথা বলেন।

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি, ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সমর্থক, প্রার্থীদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। অনেকে গুলিবিদ্ধও হচ্ছেন। কিন্তু এসব ঘটনার পরে কোনো তদন্ত হয় না, আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হয় না।

বিরোধী দলের প্রার্থীদের এবং যাঁরা আক্রমণের শিকার, তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘যারা আক্রমণ করছে তাদের কিছু বলা হচ্ছে না। এ রকম ঘটতে থাকলে স্বাভাবিকভাবে আশঙ্কা হবে, ভোটের দিন কী হতে পারে।’ তিনি আবারও সবাইকে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার কথা বলেন।

ঐক্যফ্রন্টের অভিযোগ অনুযায়ী বর্তমান নির্বাচনী পরিবেশে সংসদ নির্বাচন বানচালের কোনো আশঙ্কা তাঁরা করেন কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন, ‘আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আপনাদের তথ্যগুলো দিচ্ছি। আপনারা মূল্যায়ন করুন।’ তিনি বলেন, ‘আশঙ্কা তো আছেই। অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। তারা বুঝতে পারছে যে জনমত কোনদিকে আছে।’ ভোটের মাঠে টিকে থাকার প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, তাঁদের জনসমর্থন আছে। তাঁরা টিকে থাকবেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কাল সোমবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়েছিল। এ বিষয়ে জোটের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন আশা করেন, দেখা করার অনুমতি তাঁরা পাবেন। এ ছাড়া সোমবার সকালে হোটেল পূর্বাণীতে ১১টায় ইশতেহার ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রার্থীদের মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না, অভিযোগ করে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘পাকিস্তান আমলের নির্বাচনেও হামলা হয়নি। এখন শুধু হামলা না, গুলিও চালানো হচ্ছে।’

সরকারের উদ্দেশে জেএসডির সভাপতি আবদুর রব বলেন, ‘জনগণ যদি হামলা মোকাবিলা করতে যায়, তখন কী হবে। জনগণ জয়লাভ করতে যাচ্ছে। এখনো সময় আছে সংযত হোন, হামলা-মামলা বন্ধ করে আমাদের নির্বাচন করতে দেন।’ জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে, অভিযোগ করে রব বলেন, ‘জয় বাংলা স্লোগান আমরা দিয়েছি। হামলার জন্য জয় বাংলা স্লোগান হয়নি।’

হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার সব সরকারের মদদে হচ্ছে জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সবকিছুর জন্য সরকার দায়ী। নির্বাচনকে যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়েছে। এর জবাব ব্যালট পেপারে দেওয়া হবে।

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ঐক্যফ্রন্ট মাঠে টিকে থাকবে। মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করার জন্য যা যা করা দরকার সরকার তা-ই করছে। সেটাকে প্রতিহত করেই তাঁরা ৩০ তারিখ নির্বাচনে অংশ নেবেন।

নির্বাচন কমিশনের বাইরের অবস্থাকে ‘নির্যাতন কমিশন’ বলে আখ্যায়িত করেন বিএনপির আরেক নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিন বলেন,‘ইসি সাধু পুরুষের মতো কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে তা পালন করে না।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঐক্যফ্রন্টের ৩০০ আসনের প্রার্থীরাই প্রচারণায় বাধা পাচ্ছেন। ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বন্ধ করার পথ খুঁজছে বলে অভিযোগ করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর স্মৃতিসৌধে কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসন নিশ্চুপ এবং কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে জানায় ঐক্যফ্রন্ট।১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সেনাবাহিনীকে নামানোর দাবি জানায় এই জোট।