বিএনপির প্রার্থী নোমানের সমাবেশে হামলা

বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রচারে ব্যবহার করা অটোরিকশা ও মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। নয়াবাজার মোড়, চট্টগ্রাম, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: জুয়েল শীল
বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রচারে ব্যবহার করা অটোরিকশা ও মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। নয়াবাজার মোড়, চট্টগ্রাম, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রাম নগরে বিএনপির বিজয় শোভাযাত্রা–পূর্ব সমাবেশে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করছে দলটি। আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে নগরের নয়াবাজার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এই হামলার জন্য আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান। হামলার পর বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ির ভিআইপি টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলন করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-পাহাড়তলী) আসনে বিএনপির প্রার্থী। তাঁকে হত্যার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। হামলার পরপরই পুলিশ উল্টো বিএনপির পাঁচজনকে আটক করেছে বলে জানান নোমান।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে রোববার বিকেলে নয়াবাজার মোড় এলাকায় বিজয় শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। তাঁর বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই ৩০-৪০ জন যুবক লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। হামলাকারীরা এলোপাতাড়ি নেতা-কর্মীদের মারধর করতে থাকেন। সমাবেশে আসা লোকদের লক্ষ্য করে ইট-পাথরও ছুড়ে মারা হয়। এ সময় নির্বাচনী প্রচারণার তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়েছে।

আবদুল্লাহ আল নোমান অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফছারুল আমীনের ভাই এরশাদুল আমীন ও যুবলীগের নেতা সুমন দেবনাথের নেতৃত্বে একদল যুবক তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীদের একজন পকেট থেকে রিভলবার বের করেন। নেতা-কর্মীরা তাঁকে কোনো রকম নিরাপদে পাশের একটি বাড়িতে সরিয়ে নেন। ওখানেও হামলা করার চেষ্টা হয়।

কাজীর দেউরির বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে হামলার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। চট্টগ্রাম, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: জুয়েল শীল
কাজীর দেউরির বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে হামলার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। চট্টগ্রাম, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: জুয়েল শীল

এই ঘটনাকে ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ব্যতিক্রমী ও নৃশংস হামলা বলে আখ্যায়িত করেন বিএনপির নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এতে নিজেকে অত্যন্ত অসহায় মনে হয় তাঁর।

বর্তমানে পরিস্থিতিতে নির্বাচন করার কোনো পরিবেশ ও সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন সাবেক মন্ত্রী ও সাংসদ আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, ‘কেন সংসদ নির্বাচন করছি, তা নিজেই পুরোপুরি বুঝতে পারছি না। যেভাবে প্রতিদিন সারা দেশে হামলার ঘটনা ঘটছে তাতে কী ইলেকশন হবে, তা বুঝতে পারছি না। নির্বাচনের কথা বাদ দেন, এটি জীবন নিয়ে খেলার মতো হয়ে গেছে। আমি থাকব নিরস্ত্র, তারা সশস্ত্র। ভোটারদের কাছে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই।’

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে এরশাদুল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘উনি (নোমান) আমাদের মুরুব্বি ও আত্মীয়। ওনার ওপর হামলা করার প্রশ্নই ওঠে না। এসব বাজে কাজ আমরা করি না। ওই সময় আমি নির্বাচনী প্রচার কাজে ছিলাম। আর হামলার ঘটনা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফল।’

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ প্রথম আলোকে বলেন, হামলার খবর শুনে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। আর হামলার বিষয়ে তাঁদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।