নায়ক এলেন বাস্তবে, আপ্লুত কড়াইল বস্তিবাসী

>

 

নৌকার প্রার্থী ফারুকের গণসংযোগ। গতকাল কড়াইল বস্তি এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
নৌকার প্রার্থী ফারুকের গণসংযোগ। গতকাল কড়াইল বস্তি এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা–১৭ আসনে এবার নৌকার প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান, যিনি ‘ফারুক’ নামেই বেশি পরিচিত।

কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের কাছে ফারুক এত দিন ছিলেন কেবলই পর্দার নায়ক, দূরের নক্ষত্র। এবার ভোটের মঞ্চে আবির্ভূত বাংলা চলচ্চিত্রের এই ‘মিয়া ভাই’ তাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন সশরীরে। হাতে হাত মিলিয়ে সবার সেবা করার সুযোগ চাইলেন। তাতেই লোকজন আপ্লুত। অনেকের কণ্ঠে উচ্ছ্বাস।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গুলশান, বনানী, মহাখালী ক্যান্টনমেন্ট ও ভাষানটেক থানার একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা–১৭ আসনে এবার নৌকার প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান, যিনি ‘ফারুক’ নামেই বেশি পরিচিত। রুপালি পর্দার তারকাখ্যাতিতে উজ্জ্বল, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী অনেক আগেই মানুষের মনে আসন গেড়ে নিয়েছেন ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ কিংবা ‘লাঠিয়াল’–এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করে। গতকাল রোববার কড়াইল বস্তি এলাকায় গণসংযোগে তাঁর প্রতি মানুষের সেই ভালোবাসা আবার মূর্ত হয়ে উঠল।

ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ফারুকের পাশাপাশি ভোটযুদ্ধে নেমেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, ২০–দলীয় জোটের প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আন্দালিভ রহমান, সিংহ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী (তৃণমূল বিএনপি) সাবেক সাংসদ নাজমুল হুদা ও বর্তমান সাংসদ বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ। তবে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার জন্য অন্তত প্রচারের তোড়জোড়ে ফারুক এর মধ্যেই অন্য সবাইকে টেক্কা দিয়েছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় সদলবলে হাজির হচ্ছেন। তারকাখ্যাতির কারণে গণসংযোগে লোকসমাগমও হচ্ছে যথেষ্ট।

গতকাল ফারুক কড়াইল বস্তি এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন সকাল ১০টার পর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা। টিঅ্যান্ডটি কলোনির আনসার ক্যাম্প এলাকা থেকে ফারুকের গণসংযোগের এই বহর যখন বেলতলা এলাকায় পৌঁছাল, ততক্ষণে তা এক লম্বা মিছিলে রূপ নিয়েছে। এর মধ্যেই ফারুক স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলেন। ভোট প্রার্থনা করছিলেন। বয়স্ক ভোটারদের অনেকে ফারুকের মাথায় রাখছিলেন আশীর্বাদের হাত। মানুষের এই ভালোবাসায় উদ্বেলিত ফারুক তখন বলে ওঠেন, ‘জীবন দিয়ে হলেও আমি এই ভালোবাসার মর্যাদা রাখতে চাই।’

নির্বাচিত হলে বস্তিবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে যথাসাধ্য করার আশ্বাস দিয়ে এই চলচ্চিত্র তারকা বলেন, ‘দেড় দশক ধরে এই এলাকায় নৌকার কোনো প্রতিনিধি নেই। এর আগে যাঁরা এখানে সাংসদ হিসেবে ছিলেন, তাঁরা বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য কেবল প্রতিশ্রুতিই দিয়ে গেছেন, যার কোনোটাই বাস্তবায়িত হয়নি। তাই আমি কোনো আশার কথা বলব না, মিথ্যা স্বপ্নও দেখাব না। কাজের মধ্য দিয়েই সবকিছু প্রমাণ করব।’

এদিন ফারুক বেলতলা থেকে আদর্শপাড়া মোড় কিংবা কলোনি মাঠ, যেখানেই কথা বলেছেন, সবখানেই ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়েছেন। এই এলাকায় গণসংযোগ শেষ করে তিনি দলীয় লোকজন নিয়ে বনানীর বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের কাছে যান। সবশেষে বনানী মাঠ এলাকায় এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় অংশ নেন।

এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বনানী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জসিমউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন, গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমানসহ ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।