বিএনপির নানা অভিযোগ, পরিবেশ সুন্দর দাবি আ.লীগের

গায়েবি মামলায় বিনা ওয়ারেন্টে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, প্রচারে বাধা, পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বলছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ আছে।

আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য তুলে ধরেন প্রার্থীরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১০টি আসনের প্রার্থীদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুনীর হোসাইন খান।

মতবিনিময় সভায় মহাজোটের মাত্র দুজন প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের প্রতিনিধিরা সভায় ছিলেন। ২০-দলীয় জোটের ছিলেন ৫ প্রার্থী।

সভায় চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে বিএনপির প্রার্থী মোস্তফা কামাল পাশা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার ১১টি মাইক ভাঙচুর করেছেন। নেতা-কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। ঘরে ঘরে গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এলাকায় থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে দিচ্ছেন না।

একই অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বিএনপির প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রশাসনের সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও প্রশাসন যাতে বৈষম্যমূলক আচরণ না করে। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করে।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াতের নেতা আ ন ম শামসুল ইসলামের প্রতিনিধি জাফর সাদিক বলেন, তাঁদের নেতা-কর্মীদের মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের লোকজন। জামিনে থাকা সত্ত্বেও নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে বিএনপির প্রার্থী সরওয়ার জামাল নিজাম বলেন, ইউসিবি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তাঁর নির্বাচনী এলাকায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন জানান, যাচাই-বাছাই ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কয়েকজন প্রার্থী অবশ্য রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে সভায় জানান।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী বলেন, সবাই একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। তাঁর এলাকায় সব প্রার্থী মিলেমিশে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, প্রার্থীদের কোনো অভিযোগ-সমস্যা থাকলে তা জানাতে পারবেন। এসব সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রার্থীদের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ আছে। প্রার্থীরা তা ধরে রাখতে সহযোগিতা করবেন।

কোনো ধরনের গায়েবি মামলা করা হচ্ছে না বলে সভায় দাবি করেন জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা। নির্বাচনে তাঁদের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ভিওআইপি কলের মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে পুলিশ। ঢালাও অভিযোগ না করে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করার জন্য প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।