একজন উন্নয়ন, অন্যজন ভোটের অধিকার চান

মইন উদ্দীন খান, আবু সুফিয়ান
মইন উদ্দীন খান, আবু সুফিয়ান
>* বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য স্বাগত জানিয়েছেন মহাজোটের প্রার্থী মইন উদ্দীন খান বাদল 
* মইন উদ্দীন ১০ বছর ধরে সাংসদ
* প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নতুন মুখ আবু সুফিয়ান

চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে মহাজোটের শরিক জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ টানা ১০ বছর এই আসনের সাংসদ। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নতুন মুখ আবু সুফিয়ান। তাঁরা দুজনই কথা বলেছেন পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে।

প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য স্বাগত জানিয়েছেন মহাজোটের নৌকার প্রার্থী মইন উদ্দীন খান বাদল। তিনি বলেন, ‘আবু সুফিয়ান নতুন মানুষ। যদিও তাঁর গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়। কিন্তু বিএনপির প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন। কারণ, তিনি আপাদমস্তক একজন রাজনৈতিক কর্মী।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মইন উদ্দীন খান বলেন, ৩০ ডিসেম্বর একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সর্বস্তরের মানুষ কেন্দ্রে যাবে, ভোট দেবে। তিনি বলেন, ‘১০ বছরে আমাদের সরকার এলাকায় কী করেছে তা মূল্যায়ন করার ভার আমি জনগণের ওপর ছেড়ে দিলাম। তাঁদের সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেব।’

কর্ণফুলীর ভাঙন বোয়ালখালীর অন্যতম সমস্যা উল্লেখ করে সাংসদ মইন উদ্দীন বলেন, ‘ভাঙনরোধে নদীশাসনের কাজ প্রায় শেষ। শেখ হাসিনা সরকার তা করে দিয়েছে। এতে বোয়ালখালীবাসীর দুঃখ ঘুচেছে। এলাকায় ভৌত অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের সরকার ক্ষমতায় এলে আরও উন্নয়ন হবে।’

কালুরঘাটে কর্ণফুলীর ওপর প্রশস্ত (চার লেন) সেতু না হওয়ায় বোয়ালখালীর দুঃখ ঘুচছে না। এ প্রসঙ্গে সাংসদ মইন উদ্দীন বলেন, কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। কালুরঘাটে সেতু না হলে ওই রেল কিসের ওপর দিয়ে চলবে-প্রশ্ন তাঁর। তিনি বলেন, ‘কালুরঘাটে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের জন্য পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরির কাজ চলছে। আগামী নির্বাচনে আমাদের সরকার ক্ষমতায় এলে এবং আমি জিতলে এক বছরের মধ্যে কালুরঘাট দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। এ জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। বাকি ৩০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার দেবে।’

সাংসদ বাদল বলেন, ‘আমাদের সরকার যা বলে তা করে দেখায়। দেশের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়াই উদাহরণ। কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন হওয়া সময়ের ব্যাপার।’

মইন উদ্দীন খানকে প্রবীণ রাজনীতিবিদ অভিহিত করে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেছেন, ‘আমরা সম্প্রীতির রাজনীতি চাই। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ।’ কক্সবাজারের বাসিন্দার চট্টগ্রামে প্রার্থী হওয়া নিয়ে সাংসদ বাদলের বক্তব্যের জেরে আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার মন্তব্য নেই। তবে চট্টগ্রাম নগরে আমার বেড়ে ওঠা এবং রাজনীতির ভিত্তি তৈরি হয়েছে।’

আবু সুফিয়ানের অভিযোগ, তাঁর পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। প্রতিদিন দলীয় নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এতে আতঙ্কজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

আবু সুফিয়ান বলেন, পুলিশ আতঙ্ক তৈরি করে বিএনপির ভোটারদের দমিয়ে রাখার কৌশল নিয়েছে। তারা কি বিএনপিকে মাঠের বাইরে রেখে নির্বাচনের আয়োজন করতে চায়? তিনি বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মইন উদ্দীন খান অনেক সিনিয়র। কিন্তু পুলিশ যা করছে তা তার জ্ঞাতসারে হচ্ছে কি না, আমি জানি না।’

আবু সুফিয়ান পুলিশের মারমুখী আচরণ বন্ধ করতে সাংসদের ভূমিকা চেয়েছেন। সুফিয়ান বলেন, মইন উদ্দীন সাহেব রাজনীতিবিদ হয়ে প্রতিপক্ষকে দমন-পীড়ন করতে বলবেন না। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে মইন উদ্দীন সাহেব সহযোগিতা করতে পারেন। তিনি সহযোগিতা করলে পুলিশও বেপরোয়া আচরণ থেকে সরে আসবে।