বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় ফিরলে দেশে আরেকবার রক্তগঙ্গা বইবে: মেনন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘এবার বিএনপি-জামায়াত যদি ক্ষমতায় ফিরে আসে, তাহলে এই দেশে আরেকবার রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে। সেই রক্তগঙ্গার যৌক্তিকতা পেতেই আজকে তারা জনগণকে মিথ্যা স্বপ্ন দেখাচ্ছে।’ আজ মঙ্গলবার বিকেলে নিজের নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-৮ আসনের অন্তর্ভুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী প্রচারণা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেনন এসব কথা বলেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে মেনন বলেন, ‘কামাল হোসেন বলেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন। যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের ২৫ জনকে ধানের শীষে মনোনয়ন দিয়ে তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সেই জামায়াতকে সাথে নিয়ে আমাদের ড. কামাল হোসেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন—এর চেয়ে প্রহসন আর প্রতারণা কী হতে পারে! আজকে বিএনপিও তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেছে। কামাল হোসেন যেখানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারটি উল্লেখ করেছেন, এই কথাটি বিএনপির ঘোষণার মধ্যে নেই। এতে এই সত্যই প্রমাণিত হলো যে, বিএনপি-জামায়াতের ঐক্যের মধ্য দিয়ে যে ঐক্যফ্রন্ট তৈরি হয়েছে, সেটা আসলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিএনপি-জামায়াতকে আরেকবার হালাল করা। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তা হতে দেবে না। কারণ তারা গত ১০ বছরের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে চায়।’

প্রচারণা সভায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনরা জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত জামায়াত ও বিএনপিকে পুনর্বাসনের যে রাজনীতি শুরু করেছেন, তাকে পরাজিত করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ১৯৭০ সালের নির্বাচন আমাদের জাতীয় জীবনের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন সে রকমই গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচন। কারণ এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি স্বাধীনতা ও মুক্তির পথে হাঁটবে, নাকি পেছন দিকে হাঁটবে। সারা দেশের সব আসনে মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি আবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। সভায় তিনি বলেন, সেই ষড়যন্ত্রে হাত মিলিয়েছে কিছু মুখোশধারী মানুষ। সেই মুখোশধারীদের মধ্যে আছেন ড. কামাল হোসেন, আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু নেতা, যাঁরা ডাকসুর ভিপি ছিলেন। এই সমস্ত অধঃপতিত শক্তি একটি অশুভ জোট বেঁধেছে। আর সে কারণে এই নির্বাচনটি হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ। এরা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়। কিন্তু তাঁদের মুখোশ খসে পড়েছে।

ঢাকা মহানগর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এম এ হামিদ খানের সভাপতিত্বে ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিলাল রায়ের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিববাড়ী এলাকায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন রাশেদ খান মেনন।