আ.লীগ ও বিএনপির দুই নবীনের লড়াই

আবদুল মমিন মণ্ডল, আমিরুল ইসলাম খান
আবদুল মমিন মণ্ডল, আমিরুল ইসলাম খান

তাঁতশিল্পসমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি ও চৌহালী) আসনে প্রচারণায় নেমেছেন ছয়জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ আবদুল মজিদ মণ্ডলের ছেলে আবদুল মমিন মণ্ডল ও বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খানের প্রচারণায় এলাকা মুখর হয়ে উঠেছে।
এ দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সাফ কথা, লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীর মধ্যে।
বেলকুচি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন এবং চৌহালী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনটি গঠিত। ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯৩ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭ জন ও নারী ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯৬ জন।
এ আসনে আগে নির্বাচনগুলোর ফলাফল থেকে দেখা গেছে, ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিএনপির প্রার্থী সহিদুল্লাহ খান। ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের আবদুল লতিফ বিশ্বাস। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির মোজাম্মেল হক। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল লতিফ বিশ্বাস। ২০১৪ সালের ‘একতরফা’ নির্বাচনে সাংসদ হন আওয়ামী লীগের আবদুল মজিদ মণ্ডল। আসন্ন নির্বাচনটি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ চায় আসনটি ধরে রাখতে। বিএনপি চায় হারানো আসনটি উদ্ধার করতে।
নির্বাচনী এলাকার অন্তত ৩০ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটের মাঠে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল মমিন মণ্ডল। একক প্রার্থী হিসেবে তিনি তাঁর বাবার (বর্তমান সাংসদ আবদুল মজিদ) অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য অনেক আগে থেকেই মাঠে রয়েছেন। এদিকে অনেক নাটকীয়তার পর বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আমিরুল ইসলাম খান ধানের শীষ পেলেও আপেল প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন জেলা জামায়াতের নেতা আলী আলম।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের দুই নতুন প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা। উৎসবমুখর পরিবেশ।
আবদুল মমিন মণ্ডল বিভিন্ন জনসভা ও গণসংযোগে তাঁর বাবার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা, তরুণদের ডিজিটাল বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা ও সমৃদ্ধ বেলকুচি-চৌহালী উপজেলাকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
আবদুল মমিন মণ্ডল বলেন, তিনি আশা করেন, বিগত সময়ের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এ আসনের মানুষ আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে।
এদিকে আমিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের নানামুখী অন্যায়-অত্যাচারের জবাব দিতেই এ আসনের মানুষ ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষে ভোট দেবেন। আমার নির্বাচনী প্রচারণায় নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
আবদুল মমিন মণ্ডল স্নাতক পাস। তিনি এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয় সম্পাদক। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুল ইসলাম খানের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর। তাঁরা দুজনই ব্যবসায়ী। ব্যবসা থেকে আবদুল মমিনের বার্ষিক আয় ২ কোটি ৬২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৭৬ টাকা এবং আমিরুল ইসলামের আয় ৩ লাখ ৮ হাজার ৮৬৭ টাকা।
আবদুল মমিন মণ্ডলের নামে কোনো মামলা নেই। আমিরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা রয়েছে।