ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, আহত ৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণসংহতি আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাতজন নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এলাকায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে সোয়া ১১টার মধ্যে দুই দফায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে হামলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দায়ী করা হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র এলাকায় ছাত্র ফেডারেশনের পরিচয় দিলে আমাদের ঢাকা মহানগরের সদস্য রাসেল সরকারকে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী মারধর করে চলে যান। খবর পেয়ে আমি প্রক্টর স্যারকে ফোন করলে তিনি বলেন, তিনি গাড়ি পাঠাচ্ছেন এবং আসছেন। এর মধ্যে আমি আবার ফোন পাই, ২০-২৫টা মোটরসাইকেলে করে এসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের কর্মীদের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের তাঁরা বেধড়ক মারধর করেন। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, সংগঠনের পরিচয় দেওয়ার পরেও তাদের মারধর করা হয়েছে।’
মারধরের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানান বেনজীর ৷

মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের কথা-কাটাকাটি হয়েছে এবং বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। দুজনই ছাত্রলীগের পদধারী। মারধরের পর হলের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে সেখানে আসে। সেখানে আবার কথা-কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম ছিল। আমি সেখান থেকে সবাইকে ছুটিয়ে নিয়ে আসি। তাৎক্ষণিকভাবে দুই পক্ষকেই নিবৃত্ত করি।’

ঘটনাটিকে একটি অরাজনৈতিক বিষয় দাবি করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘হলের শিক্ষার্থী আক্রান্ত হওয়ায়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি অনুযায়ী, হলের সমস্ত শিক্ষার্থীই ছুটে গেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ ছাত্রলীগেরও হতে পারে, কিন্তু অধিকাংশই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।’

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

হামলায় আহতরা হলেন, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার সম্পাদক ইমরান হোসেন, ঢাকা মহানগরের সদস্য রাসেল সরকার, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান খান রিচার্ড ও সাদিক রেজা, ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অনুপম রায় রূপক, সাবেক সদস্য রায়হান জামান ও সুজন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আহতরা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রসঙ্গত, শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিনির্মাণে ২০ দিনব্যাপী শিক্ষা সম্মেলন উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের ভবনটি ভাড়া নেয় ছাত্র ফেডারেশন। ১০ ডিসেম্বর থেকে সংগঠনটির বিভিন্ন শাখার কর্মীরা এখানে থাকছেন এবং রাত্রিযাপন করছেন।