পুলিশের অনুমতি না পেয়ে গণসংযোগ বন্ধ সিরাজের

জি এম সিরাজের সংবাদ সম্মেলন। গতকাল সীমাবাড়ী ইউনিয়নের একটি রেস্তোরাঁ চত্বরে। ছবি: প্রথম আলো
জি এম সিরাজের সংবাদ সম্মেলন। গতকাল সীমাবাড়ী ইউনিয়নের একটি রেস্তোরাঁ চত্বরে। ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বিএনপির প্রার্থীর গণসংযোগের জন্য থানা-পুলিশের অনুমতি মেলেনি। এ কারণে গতকাল মঙ্গলবার বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের বিএনপির প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারেননি।

বেলা আড়াইটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। শেরপুরের সীমাবাড়ী ইউনিয়নে একটি রেস্তোরাঁর চত্বরে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জি এম সিরাজ জানান, গতকাল শেরপুরের গাড়িদহ ইউনিয়নে ভোটারদের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। সোমবার রাতেই বিষয়টি থানা–পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তিনি গতকাল গাড়িদহ ইউনিয়নে গণসংযোগ করবেন। কিন্তু থানা-পুলিশের অনুমতি মেলেনি। এ কারণে গণসংযোগ করতে পারেননি। তিনি বগুড়া-৫ আসনের শেরপুরে সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অনুরোধ জানান।

জি এম সিরাজ আরও বলেন, সোমবার দলের নেতা–কর্মীদের নিয়ে শেরপুরের কুসুম্বী ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে যান। এ সময় তাঁর দলের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে নিরাপত্তার নামে পুলিশ তাঁর দলের তিন নেতাকে থানায় নিয়ে যায়। এরপর ওই রাতে মিথ্যা মামলায় ওই তিন নেতাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, যা অত্যন্ত খারাপ নিদর্শন। এই আসনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গ্রেপ্তার–আতঙ্কে নেতা–কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। মিথ্যা-গায়েবি মামলা দিয়ে তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে শেরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব পিয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর বলেন, গতকাল একই সময়ে শেরপুরের ধুনট রোড এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাবিবর রহমানের গণসংযোগ ছিল। গত সোমবারের মতো শেরপুরে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে নতুন করে কোনো সংঘাত না ঘটে, এ জন্যই তিনি জি এম সিরাজকে বলেছেন পরে প্রচারে বের হওয়ার জন্য।

 পাল্টাপাল্টি মামলা

শেরপুরে নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার ঘটনায় শেরপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করা হয়েছে। একটি মামলার বাদী জি এম সিরাজ। এতে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় তাঁর গাড়িবহরে হামলায় ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

আরেকটি মামলার বাদী শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব। এতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৩২ জন নেতা–কর্মী ও সমর্থককে আসামি করা হয়।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহসান হাবিবের দায়ের করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা হলেন শেরপুর পৌর শহরের উলিপুর এলাকার বাসিন্দা শেরপুর শহর বিএনপির সভাপতি বি এইচ এম কামরুজ্জামান, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুদ্দৌলা মামুন ও শহরের শ্রীরামপুরপাড়ার মামুনুর রশিদ।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তন্ময় বর্মণ বলেন, সোমবার বেলা আড়াইটায় উপজেলার গোঁসাইবাড়ী বটতলায় বগুড়া-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কার্যালয়ে কর্মীদের নিয়ে আলোচনার সময় বিএনপির প্রার্থীর লোকজন হামলা করেন। এতে অন্তত ছয়জন রক্তাক্ত জখম হন। এ ঘটনায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।