এবারও আলোচনার কেন্দ্রে এরশাদ

এইচ এম এরশাদ। ফাইল ছবি
এইচ এম এরশাদ। ফাইল ছবি

নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর দিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলটির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের গুঞ্জনে নাটকীয়তার সূত্রপাত হয় ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনে। সেই গুঞ্জনের রেশ মিলিয়ে না যেতেই এবার নির্বাচনের মাত্র পাঁচ দিন আগে নৌকার প্রার্থীর প্রার্থিতা স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছেন ধানের শীষের প্রার্থী।

এই আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির এইচ এম এরশাদ ছাড়াও লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ। বিএনপি আমলের মন্ত্রী নাজমুল হুদা লড়ছেন সিংহ প্রতীকে। আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদও আছেন ভোটের লড়াইয়ে। নানা কারণে গতবারও আলোচনার কেন্দ্রে ছিল আসনটি। সব মিলিয়ে এবারও আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে আসনটি।

১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর এই আসনে নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক। ১১ ডিসেম্বর গুলশান–২–এর ওয়ান্ডারল্যান্ড মাঠে কর্মিসভার মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন একসময়ের জনপ্রিয় এই অভিনেতা। এরপর থেকে তিনি প্রায় প্রতিদিনই যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। গতকাল মঙ্গলবারও তিনি বনানী, গুলশান ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় রিয়াজ ও ফেরদৌসসহ এই সময়ের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র তারকাদের নিয়ে রোড শো করেছেন।

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনেও এই আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন এরশাদ। সে সময় তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে নানা নাটকীয়তা হয়। শেষ মুহূর্তে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর ‘অসুস্থ’ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরে এই আসনে তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হলেও রংপুর থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও ভোটের আগে অসুস্থ হয়ে কয়েক দিন হাসপাতালে কাটানোর পর এখন চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে আছেন এরশাদ। ঢাকা-১৭ আসন থেকে তাঁর সরে দাঁড়ানোর গুঞ্জনের মধ্যেও প্রচারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দলের নেতা–কর্মীরা।

এদিকে এরশাদের নির্বাচনে থাকা না–থাকা নিয়ে চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ। দলটির একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বাইরে কে মাঠে আছে বা নেই তা নিয়ে তাঁরা মোটেও চিন্তিত নন। তাঁরা জয়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিজেপির আন্দালিভ রহমান পার্থকে ধরা হলেও তাঁকে প্রকাশ্য গণসংযোগে দেখা গেছে কমই। চোখে পড়ছে না তাঁর পোস্টার। গতকালও ক্যান্টনমেন্ট, বনানী ও গুলশানের কয়েকটি এলাকা ঘুরে ধানের শীষের কোনো পোস্টার দেখা যায়নি। এ বিষয়ে আন্দালিভের ভাষ্য, পোস্টার লাগানোর পরপরই ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। মামলার ভয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বড় অংশ ঘরছাড়া। এ অবস্থায় পূর্বঘোষণা না দিয়ে নীরবে প্রচার চালানোর কৌশল নিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া প্রচারণার ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন আন্দালিভ।

আন্দালিভের পক্ষে ফারুকের প্রার্থিতা স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে করা রিট আবেদনটির শুনানি আজ বুধবার হওয়ার কথা আছে।

নৌকা ও লাঙ্গলের প্রার্থীর বাইরে সবচেয়ে বেশি পোস্টারের দেখা মিলেছে এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা ও জাকের পার্টির কাজী মো. রাশেদুল হাসানের। নাজমুল হুদা নির্বাচন করছেন সিংহ প্রতীক নিয়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আন্দালিভের মতো এই প্রার্থীও তরুণদের লক্ষ্য করে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন।