প্রচারণায় নেমে বিএনপির তিন প্রার্থী হামলার মুখে

মানিকগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খানের প্রচারণার সময় গতকাল দুপুরে হরিরামপুর উপজেলার চালা বাজারে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।  ছবি: প্রথম আলো
মানিকগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খানের প্রচারণার সময় গতকাল দুপুরে হরিরামপুর উপজেলার চালা বাজারে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ছবি: প্রথম আলো

প্রচারণায় নেমে মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে হামলার মুখে পড়েছেন বিএনপির তিন প্রার্থী। গতকাল মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খানের গাড়িবহরে হামলা হয়। আর মুন্সিগঞ্জ-১ ও ৩ আসনে হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির প্রার্থীর কর্মীরা।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খানের প্রচারণাকালে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তাঁর কর্মীদের অভিযোগ, গতকাল দুপুরে হরিরামপুরের দিয়াবাড়ি এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গাড়িবহরে হামলা করেন।

এদিকে এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং কর্মীদের মারধরের অভিযোগ এনে বিএনপির প্রার্থীসহ তাঁর কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা। মামলায় মঈনুল ইসলাম খানসহ তাঁর ৩৩ জন কর্মী ও সমর্থকের বিরুদ্ধে হরিরামপুর থানায় মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০-৪৫ জনকে আসামি করা হয়। তবে এলাকাবাসী বলেছেন, নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর বা হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বিএনপির কর্মীরা বলেন, গতকাল মঈনুল ইসলামের হরিরামপুরে প্রচারণা ও গণসংযোগ করার কথা ছিল। বেলা ১১টার দিকে সিঙ্গাইর উপজেলার চারিগ্রাম এলাকার বাড়ি থেকে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে হরিরামপুরের দিকে রওনা হন তিনি। হরিরামপুরের কাণ্ঠাপাড়া এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন বহরে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর যাত্রাপুর এলাকায় বিচারপতি নূরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের সামনে বহরটি পৌঁছালে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে গাড়িবহরে হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় বহরে থাকা বিএনপির প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা ধাওয়া দিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পিছু হটেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বহরটি হরিরামপুরের দিয়াবাড়ি বাজার এলাকায় পৌঁছালে লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁরা বহরের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।

এদিকে গতকাল মুন্সিগঞ্জ সদরে বিএনপির প্রার্থীর নির্বাচনী গণসংযোগে হামলা হয়। ঘটনায় সংবাদকর্মীসহ আটজন আহত হন। এ ছাড়া সোমবার দিবাগত রাতে গজারিয়ায় আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জ শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আবদুল হাই। তিনি জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কের বিভিন্ন দোকানে গণসংযোগ শেষে লঞ্চঘাট হয়ে দলীয় কার্যালয়ে ফিরছিলেন। পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিছিলের পেছন থেকে লঞ্চঘাট এলাকার কয়েকজন দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। এ সময় সংবাদকর্মীরা হামলার ভিডিও ধারণ করার চেষ্টা করলে চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের ক্যামেরাম্যান রাজীব হোসেন বাবুর ওপর চড়াও হয় দুর্বৃত্তরা। তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে তাঁর ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

অন্যদিকে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শাহ মোয়াজ্জেম গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ‘সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার বড় পাউলদিয়া গ্রামে ৩০-৩৫ জন লোক মোটরসাইকেলে করে এসে আমার গাড়িবহরে হামলা করে।’ তিনি বলেন, তাঁর কর্মীদের কোনো পোস্টার টাঙাতে দেওয়া হচ্ছে না। কিছু টাঙানো ছিল, তা–ও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মী যাকে পাচ্ছে, তাঁকেই গ্রেপ্তার করছে। প্রচারণা চালাতে দেওয়া হচ্ছে না।