ধানের শীষ কোনো দলের নয় ঐক্যের প্রতীক: ড. কামাল

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন ধানের শীষকে ঐক্যের প্রতীক বলে উল্লেখ করে এই প্রতীকে ভোট দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ৩০ ডিসেম্বর আরেক বিজয় দিবস হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধানের শীষ কোনো দলের না এটা ঐক্যের প্রতীক।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় পুরানা পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। কামাল হোসেন বলেন, ‘ধানের শীষে ভোট দিলে আপনারা মুক্ত হবেন। এটা কোনো দলের প্রতীক না এটা ঐক্যের প্রতীক। এটার পক্ষে ভোট দিলে জনগণ মুক্তি পাবে। ঐক্যবদ্ধ জনগণের পক্ষে ভোট দেন, ধানের শীষে ভোট দেন।’ এ সময় তিনি ধানের শীষ প্রতীক তুলে ধরেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন জোটের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। ছবি: আবদুস সালাম
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন জোটের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। ছবি: আবদুস সালাম

সবার কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে বিজয়ের আশা প্রকাশ করেন কামাল হোসেন। তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ শক্তির কাছে অস্ত্রের কাছে মাথা নত করেনি, পরাজিত হয়নি। এ বিশ্বাস রেখে তিনি সবাইকে মাঠে থাকার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পরে ৩০ ডিসেম্বর আরেক বিজয় দিবস হবে।

কর্মীরা ভয়ে আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘অসুবিধার সৃষ্টি হয়, কিন্তু ১৬ কোটি মানুষকে ধরাও সম্ভব না, মারা সম্ভব না।’

সরকারের উন্নয়ন প্রচারের সমালোচনা করে কামাল হোসেন বলেন, প্রবৃদ্ধির হার বাড়া মানে উন্নয়ন না। উন্নয়নের মধ্যে গণতন্ত্র বা মানবাধিকার না থাকলে তাকে উন্নয়ন বলা যায় না। পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ূব খানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন উন্নয়ন বলে মুখে ফেনা উড়াত। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, উন্নয়নের কোনো মানে হয় না যদি মানুষের অধিকার না থাকলে।’ তিনি আরও বলেন, সরকারের ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের কথা শুনে তাঁর আইয়ূব খানের ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রচারের কথা মনে পড়েছে।

জনগণকে সাহস রাখার আহ্বান জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, এ দেশের মানুষ বেদখল হবে না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ও শহীদদের জীবনের বিনিময়ে পাওয়া মালিকানা ছেড়ে না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

৩০ ডিসেম্বর জনগণ ভোটের বিপ্লব করবে জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, যারা ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে এটা তাদের বিজয় না, সবার বিজয় হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এর মধ্যে সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। নির্বাচন মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগকে এখন রাষ্ট্রযন্ত্রের সাহায্য নিতে হচ্ছে।

কর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা কাদের সিদ্দিকী বলেন, নাজেহাল হলেও কর্মীরা ভিত না। তারা এতে বিক্ষুব্ধ হচ্ছে। গত ১০ দিনে সরকার যা করেছে তাতে তারা নিজেদের ক্ষতি করেছে। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ইসির ভূমিকার জন্য বর্তমান প্রধান কমিশনসহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা নিন্দিত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরাম থেকে সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির মঈন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।