নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে: মান্না

মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

হোটেলের ভেতরে-বাইরে সার্বক্ষণিক পুলিশি নজরদারির মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে তাঁকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বগুড়া শহরের চার তারকা হোটেল নাজ গার্ডেনের লবিতে এক ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ তোলেন।

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন মান্না। তাঁর অভিযোগ, তিনি নিরাপত্তা চাননি। অথচ হোটেলে অবস্থান করার সময় সেখানে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সার্বক্ষণিক তাঁকে অনুসরণ করছে। নেতা-কর্মীরা যাতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে এ জন্যই পুলিশ এমন ভীতি তৈরি করছে।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে চাওয়া হচ্ছে, আমি যেন নির্বাচিত হতে না পারি। তবে এই নির্বাচনে প্রশাসন ও পুলিশ সরাসরি আমার প্রতিপক্ষ না হলে মানুষের জয় হবে।’ তিনি বলেন, হোটেল নাজ গার্ডেনে ওঠার পর থেকেই গোয়েন্দা পুলিশ তাঁর গতিবিধি অনুসরণ করতে হোটেলে অবস্থান নেয়। বুধবার পুলিশ হোটেলের বাইরে অবস্থান করছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার কিছু আগে হঠাৎ করেই হোটেল এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতা বেড়ে যায়। সন্ধ্যায় চা খেতে নিচে নেমে দেখেন ডিবি পুলিশের সাত সদস্যের দলটির দুজনের হাতে ব্যাজ পরা। অন্য চারজনের গায়ে ছিল ডিবি পুলিশ লেখা জ্যাকেট। আর পুলিশের ভ্যান ছিল বাইরে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদের জিজ্ঞাসা করি, আপনারা এখানে কেন এসেছেন? তাঁরা কোনো উত্তর দেননি। কক্ষে চলে আসার পরে গোয়েন্দা পুলিশের সাত সদস্য সন্ধ্যায় হোটেলের ভেতরে চলে আসেন, লবিতে বসেন। আমার কক্ষ পর্যন্ত যেতে চান। হোটেল কর্তৃপক্ষ যেতে দেয়নি।

মাহমুদুর রহমান মান্না অভিযোগ করেন, আমার নির্বাচনী এলাকা শিবগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনো নেতা-কর্মী যাতে আমার কাছে আসতে না পারে এই কারণেই ভীতি ছড়ানো হচ্ছে। তিনটি মামলা করা হয়েছে ধানের শীষের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ পর্যন্ত ১২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা ছাড়াও সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ডেকে নিয়ে থ্রেট করা হচ্ছে।

নাজ গার্ডেনের সহকারী ব্যবস্থাপক (ফ্রন্ট অফিস) তানভির রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় সাদা পোশাকের দুজন পুলিশ লবিতে ঢুকে মাহমুদুর রহমান মান্না সাহেবের খোঁজ করে। তাঁর কক্ষে, করিডরে কোনো লোকজন আছে কিনা, তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে এসেছে কি না এসব জিজ্ঞাসা করে। এ সময় তারা মান্না সাহেবের কক্ষে যেতে চায়। কিন্তু হোটেলের অতিথি কক্ষে এভাবে কারও যাওয়ার নিয়ম না থাকায় আমি অনুমতি দিইনি। পরে পুলিশের আরও ৬ সদস্য হোটেলে আসে। তারাও একই তথ্য জানতে চায়।’

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্নার খোঁজে পুলিশের কোনো সদস্য হোটেলে যায়নি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুলিশের রুটিন কাজ। মাহমুদুর রহমান যে হোটেলে অবস্থান করছেন, সেখানে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ যেতেই পারে। তবে পুলিশের অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।