প্রচারের শেষ দিনেও বিপরীত চিত্র

খুলনা-২ আসনে নৌকার প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের নির্বাচনী মিছিল। গতকাল খুলনা সদরের ফেরিঘাট মোড় এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
খুলনা-২ আসনে নৌকার প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের নির্বাচনী মিছিল। গতকাল খুলনা সদরের ফেরিঘাট মোড় এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

খুলনার ছয়টি সংসদীয় আসনে নৌকার প্রার্থীরা শেষ মূহূর্তেও জোর প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে শেষ দিনের প্রচারণায় মাঠে ছিলেন না প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের অনেক প্রার্থী। হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে নির্বাচনের মাঠে নামতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

খুলনা-১ আসনে (দাকোপ-বটিয়াঘাট) ধানের শীষের প্রার্থী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত তাঁর পূর্বনির্ধারিত এলাকায় গণসংযোগ চালাতে পারেননি। সকাল থেকে বটিয়াঘাটা উপজেলার আমিরপুর, বালিয়াডাঙ্গা, ভান্ডারকোট ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর প্রচারণা চালানোর কথা ছিল। এ বিষয়ে আমীর এজাজ খান বলেন, ‘প্রতিদিন প্রচুর নেতা–কর্মীকে আটক করা হচ্ছে। এখন কর্মীরা আমার সঙ্গে থাকতেও ভয় পাচ্ছেন।’

খুলনা-২ আসনে (সদর-সোনাডাঙ্গা) ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি গতকাল সকালে খুলনার নির্বাচনী পরিবেশ ও নেতা–কর্মীদের ওপর মামলা–হামলার বিষয় তুলে ধরে প্রেস ব্রিফিং করেন। এরপর তিনি নগরের রেলওয়ে মার্কেট, নতুন বাজার স মিল, আক্তার চেম্বার, সিটি করপোরেশন ভবন এলাকায় গণসংযোগ করেন।

অন্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যালয়ে লোকসমাগম হলেও ব্যতিক্রম ছিল চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্ট রোডে অবস্থিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়। সারা দিনই বন্ধ ছিল এটি।  প্রথম আলো
অন্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যালয়ে লোকসমাগম হলেও ব্যতিক্রম ছিল চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্ট রোডে অবস্থিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়। সারা দিনই বন্ধ ছিল এটি। প্রথম আলো

খুলনা-৩ আসনে (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) ধানের শীষের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল গতকাল সকালে নগর বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি গত বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর বাসায় হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও সারা দিন অবরুদ্ধ থাকার ঘটনা তুলে ধরেন। পরে সেখান থেকে নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার পথে তাঁর গাড়িতে দুই দফায় তল্লাশি চালানো হয়। গতকাল নগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ চালানোর কথা থাকলেও তিনি বিকেল পর্যন্ত প্রচারণায় নামতে পারেননি। ধানের শীষের প্রার্থী বলেন, ‘আমার গাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কর্মীদের নিয়ে মাঠে নামা যাচ্ছে না। কর্মীরাও ভয়ে নামছে না। বাসায় আছি। একা একা মাঠে নামা কতটুকু নিরাপদ, তা বুঝতে পারছি না।’

মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তারের ভিড়ে ভিন্ন ছিল খুলনা-৪ আসন (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া)। এই আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল গতকাল জমজমাট প্রচারণা চালিয়েছেন। সকালে রূপসা উপজেলার সেনের বাজার থেকে শুরু করে তেরখাদা সদর পর্যন্ত গণসংযোগ ও প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। প্রচারণায় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়।

খুলনা-৫ আসনের (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) ধানের শীষের প্রার্থী মিয়া গোলাম পরওয়ারের গতকাল ডুমুরিয়া সদর এলাকায় গণসংযোগ চালানোর কথা ছিল। তবে আগের দিন তাঁর প্রচার মাইক ছিনিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্নভাবে বাধার শিকার হন তিনি। এ কারণে গতকাল প্রচারণায় নামেননি।

খুলনা-৬ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ কারাগারে। এত দিন তাঁর পক্ষে নেতা–কর্মীরা ছোট পরিসরে প্রচারণা চালাতেন। তবে কয়েক দিন ধরে গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেক কৌশলে প্রচারণায় আছেন তাঁরা। প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট লিয়াকত আলী সরদার জানান, গতকাল তাঁরা প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামতে পারেননি। কর্মীরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন।