জয়-পরাজয়ের ভূমিকা রাখবেন তরুণ ভোটাররা

চট্টগ্রাম–১২ (পটিয়া) আসনে ৩৯ হাজার ৫১৪ জন নতুন ভোটার এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদের মধ্যে ৯৫ ভাগই তরুণ। আগামীকাল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ ভোটাররা প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

পটিয়া উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনের ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৯৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৩৯ জন, নারী ভোটার হচ্ছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬২ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১১টি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫১ জন। ভোটার বেড়েছে ৩৯ হাজার ৫১৪ জন।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ছিল ২৮ হাজার ৮১৩টি। নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

এবারের নির্বাচনে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নয়জন প্রার্থী। তাঁদের দুই-একজন ছাড়া বাকিরা ভালোভাবেই প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। প্রচারণায় প্রার্থীদের বিশেষ দৃষ্টি ছিল তরুণ ভোটারদের দিকে।

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অন্তত ৫০ জনের বেশি তরুণ ভোটারের সঙ্গে কথা হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীর কাছে পটিয়াকে মাদকমুক্ত রাখা, এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অব্যাহত রাখা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণ-তরুণীদের সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি করার কথা বলেছেন ভোটাররা।

পটিয়ায় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি বালক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান অধিকাংশ তরুণ ভোটার। এ ছাড়া উপজেলার কাঠামোগত উন্নয়নসহ এককালের শিক্ষা-সংস্কৃতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গৌরব ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন অনেক তরুণ ভোটার। বেশির ভাগ তরুণই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সরকার চান।

নতুন ভোটারদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী ও পটিয়া পোস্ট অফিস এলাকার বাসিন্দা তারেক আজিজ বলেন, ‘ভোট দেওয়ার ইচ্ছা আছে। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো থাকলে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে যাব।’

তারেক আজিজ আরও বলেন, ‘যিনি পটিয়াকে মাদকমুক্ত রাখবেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারবেন, তাঁকেই ভোট দেব।’

কচুয়াই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জামসেদ বলেন, ‘জীবনে প্রথম ভোট দেব, তাই ৩০ ডিসেম্বরের অপেক্ষায় আছি। যেহেতু পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী থাকবে আশা করি সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া পটিয়াকে জেলায় রূপান্তরিত করতে হবে।

নতুন ভোটারদের সমর্থন কতটুকু আশা করেন জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র হারুনুর রশিদ বলেন, ‘তরুণদের জন্য বর্তমান সরকার মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এই জন্য তাঁদের নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়া আহ্বান জানাচ্ছি।’

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, ‘তরুণ সমাজের কোটাবিরোধী আন্দোলন সমর্থন করেছি। পুলিশ, সেনা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী ছাড়া সিভিল প্রশাসনের চাকরির বয়সসীমা থাকবে না। তরুণদের ধ্বংসের হাত থেকে মুক্ত রাখতে মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠাসহ নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিএনপি, ২০–দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’