৫৬ লাখ ভোটারের হাতে ১১৭ প্রার্থীর ভাগ্য

অর্ধকোটির বেশি ভোটারের হাতে আজ রোববার চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ১১৭ প্রার্থীর ভাগ্য পরীক্ষার দিন। এই পরীক্ষায় সারা দেশের মতো এখানে আওয়ামী লীগবিএনপি নেতৃত্বাধীন দুই জোটের প্রার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে। এখানে মাত্র দুটি আসনে ছাতা ও লাঙ্গল নিয়ে লড়ছেন দুজন।

১৬ আসনের মধ্যে তিনটি চট্টগ্রাম নগরে পড়েছে। এ ছাড়া আরও তিনটি আসন নগরের ওয়ার্ড এবং সংলগ্ন তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। অপর ১০টি আসন পুরোপুরি উপজেলা এলাকায়। ভোটারদের সরব উপস্থিতিতে উৎসবমুখর নির্বাচন হবে, এমন প্রত্যাশা প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টদের।

চট্টগ্রাম জেলার ১০টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কেন্দ্রে ব্যালট পেপারও চলে গেছে। এখন কেবল ভোটের প্রতীক্ষা। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করার জন্য সবাই সচেষ্ট।

১৬ আসনের মোট ভোটার ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬৫। এর মধ্যে পুরুষ ও নারী ভোটার যথাক্রমে ২৯ লাখ ১২ হাজার ৭৫ এবং ২৭ লাখ ২৫ হাজার ৩৯০। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের চেয়ে ভোট বেড়েছে ৪৯ লাখ ২২ হাজার ৪৭৭। নতুন ভোটার ৭ লাখ ১৪ হাজার ৯৮৮। ২০০৮ সালের তুলনায় ভোটার বেড়েছে ১২ লাখ ৩৮ হাজার।

১৬ আসনে ১ হাজার ৮৯৯টি কেন্দ্রের ১০ হাজার ৮৮৭টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সবচেয়ে বেশি ১৭০টি কেন্দ্র রয়েছে বোয়ালখালী উপজেলা এবং সংলগ্ন নগরের চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ থানা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৮ আসনে। তবে সবচেয়ে বেশি ভোটার চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-বন্দর) আসনে, ৫ লাখ ৭ হাজার ৪০৯। এখানে কেন্দ্রসংখ্যা ১৪৩টি। সবচেয়ে কম কেন্দ্র সন্দ্বীপে ৭৯টি। ভোটারও এখানে সবচেয়ে কম ২ লাখ ২ হাজার ৬৩৫।

১৬ আসনের ১ হাজার ৩২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রেখেছে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ১৬ আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে কৌতূহল রয়েছে ভোটারদের মধ্যে।

চট্টগ্রামের ১৬টিতে মোট প্রার্থী ১১৭ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রাম-৮ আসনে ১১ জন। সবচেয়ে কম তিনজনমাত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চট্টগ্রাম-৭ (রাউজান) আসনে।

দুই জোটের মধ্যে বিএনপি তার শরিকদের ছেড়েছে চারটি আসন। এগুলো হলো চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে এলডিপির কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া, লোহাগাড়া) আসনে জামায়াতের আ ন ম শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ও চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে এলডিপির মো. নুরুল আলম। এর মধ্যে অলি আহমদ তাঁর দলের প্রতীক ছাতা নিয়ে নির্বাচন করছেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ জোট চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসন তরীকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে এবং চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসন জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ছেড়ে দিয়েছে। শেষের জন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের মধ্যে ১৫ জনই সাংসদ।

১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের পর ২৭ বছরে চট্টগ্রামে ভোটার বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। ২০০৮ সালের শেষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পর নতুন ভোটার হয়েছে ১২ লাখ ৩৮ হাজার।