স্বাগত ২০১৯

সময় কখনো নিষ্ফলা যায় না। অনেক ঘটনার জন্ম দিয়ে অতীতের ঘরে জমা হলো আরও একটি বছর। গতকাল সোমবার বছরের শেষ দিনের সূর্যটা অকৃপণভাবে উজ্জ্বল সোনালি রোদ ছড়িয়েছে। একেবারে উদয়াস্ত। উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে গেছে পৌষের শীতে কাতর প্রাণিকুলে। সেই পথ বেয়ে আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে আরেকটি নতুন বছর। বদলে যাবে পুরোনো দিনপঞ্জিকা। আজ এবং আগামী দিনগুলোতে কল্যাণময় উজ্জ্বল দিনের প্রত্যাশায় স্বাগত ২০১৯।

একেকটা বছর শেষ হয়ে এলে পাওয়া না–পাওয়ার একটা হিসাব–নিকাশ করতে আগ্রহ জাগে সবার মনেই। অতীতের ব্যর্থতাকে জয় করে একই সঙ্গে নতুন বছরের জন্য নতুন প্রত্যাশায় বুক বাঁধে। বিদায়ী ২০১৮ সালের সব অপ্রাপ্তি ও বেদনা ভুলে নতুন বছরের সেই প্রত্যাশা হোক শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য। শুরু হোক ঐক্যবদ্ধভাবে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি।

নতুন বছর শুরুর প্রাক্কালে ফেলে আসা বছরের দিকে তাকালে জনজীবনে আলোড়ন তোলা অনেক ঘটনাই চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গুম, খুন, আলোচিত দুর্নীতির বিচার এবং সব ছাপিয়ে গায়েবি মামলা। এর মধ্য দিয়েই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে এগিয়েছে দেশ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বছরের শেষ দিকে গিয়ে রাজনীতিতে সৃষ্টি হয় নতুন এক মেরুকরণ। অবশেষে অনুষ্ঠিত হয় দেশে-বিদেশে বহুল আলোচিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

নতুন বছরে শপথ নেবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকার। শুরু হবে নতুন লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলা। নতুন বছরে সবার প্রত্যাশা, সেই চলার পথে যেন সঙ্গী হয় দেশের প্রতিটি মানুষ। কাউকে পেছনে ফেলে কিংবা প্রত্যাখ্যান করে নয়, অগ্রগতির অংশ হোক ঐক্যবদ্ধ জাতি।

নতুনের প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরকালের। সে জন্যই খ্রিষ্টীয় নববর্ষ এ দেশেও সার্বজনীনতা পেয়েছে। নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে খ্রিষ্টীয় বর্ষবিদায় ও নতুন বছর বরণ করে নেওয়ার অনুষ্ঠান।

এর আরও কারণ, নতুনের মধ্যে থাকা অনন্ত সম্ভাবনা। নতুনের মধ্যে থাকে সামর্থ্য এবং পরিবর্তনের প্রয়াসও। পুরোনোর পুনরাবৃত্তি যখন মানুষের জীবন, সমাজ ও সংস্কৃতিতে অচলায়তনের দেয়াল তুলে দেয়, তখন সেখান থেকে মুক্তির পথ দেখায় নতুন। আজ নতুন বছরে সেই নতুনের আবাহনে মেতে উঠুক সমগ্র দেশ। বিগত বছরের ভুল সংশোধিত হোক। মন্দ ও কুৎসিত নিক্ষিপ্ত হোক আস্তাকুঁড়ে। ২০১৯ সালে ফিরে আসুক দেশের সব মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধি।