সুনামগঞ্জে ২২, হবিগঞ্জে ১৬ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত ভোট না পাওয়ায় সুনামগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৩২ প্রার্থীর মধ্যে ২২ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আর হবিগঞ্জের চারটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ২৪ প্রার্থীর মধ্যে ১৬ জনই তাঁদের জামানত হারিয়েছেন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া ভোটের হিসাব থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

নিবার্চন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কোনো আসনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ পেলে ওই প্রার্থী জামানত ফেরত পাবেন। না পেলে তাঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়।

সুনামগঞ্জ-১ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯০৮টি। নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৬৪ হাজার ২৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজির হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৯১৫ ভোট। এখানে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তিনজনের। তাঁরা হলেন জাকের পার্টির আমান উল্লাহ আমান (৪৪৩ ভোট), ইসলামী আন্দোলনের ফখর উদ্দিন (১ হাজার ৪৩০ ভোট) এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের বদরুদ্দোজা সুজা (১৮৫ ভোট)

সুনামগঞ্জ-২ আসনে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার ২১৫। এ আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের জয়া সেনগুপ্তা। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ১৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির নাছির উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫৮৭ ভোট। এখানে জামানত হারিয়েছেন চারজন। তাঁরা হলেন গণতন্ত্রী পার্টির গোলজার আহমদ (২০৮ ভোট), কমিউনিস্ট পার্টির নিরঞ্জন দাস (৩৩৩ ভোট), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মাহমুদ হাসান চৌধুরী (৮৭ ভোট) এবং ইসলামী আন্দোলনের আবদুল হাই (৩৫৫ ভোট)।

সুনামগঞ্জ-৩ আসনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৭টি। এই আসনে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৬৩ হাজার ১৪৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের শাহীনুর পাশা চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৯২৫ ভোট। জামানত হারিয়েছেন এলডিপির মাহফুজুর রহমান খালেদ (৫১৩ ভোট), ইসলামী আন্দোলনের মহিবুল হক আজাদ (৩২৮ ভোট) জাকের পার্টির শাহজাহান চৌধুরী (১২৬ ভোট) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ সৈয়দ মুবশ্বির আলী (৫১ ভোট)।

সুনামগঞ্জ-৪ আসনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৯০৪। মহাজোটর প্রার্থী সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ লাঙ্গল প্রতীকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৮৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মোহাম্মদ ফজলুল হক আছপিয়া ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৭৪৯ ভোট। জামানত হারিয়েছেন মুসলিম লীগের আল হেলাল (১১৫ ভোট), ইসলামী আন্দোলনের তানভীর আহমদ তাছলিম (১ হাজার ৫২৯ ভোট), খেলাফত মজলিসের মুফতি আজিজুল হক (১ হাজার ৪১৬), এনপিপির মোহাম্মদ দিলোয়ার (৪৫৬ ভোট) এবং স্বতন্ত্র কামরুজ্জামান (৩৬৫ ভোট)।

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে ভোট পড়েছে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৮টি। জয়ী আওয়ামী লীগের মুহিবুর রহমান মানিক নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ২১ হাজার ৩২৮ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মিজানুর রহমান চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৬৪২ ভোট। জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া প্রার্থীরা হলেন গণফোরামের আইয়ুব করম আলী (৬৪৬ ভোট), খেলাফত মজলিসের মোহাম্মদ সফিক উদ্দিন (২০৬ ভোট), ন্যাপের আবদুল ওদুদ (৬৩৫ ভোট), বিএনএফের আশরাফ হোসেন (৮১ ভোট), জাতীয় পার্টির নাজমুল হুদা (৫৫১ ভোট), ইসলামী আন্দোলনের হুসাইন আল হারুন (৭৩৩ ভোট)

হবিগঞ্জ-১ আসনে জামানত হারিয়েছেন লাঙ্গল প্রতীকে মোহাম্মদ আতিকুর রহমান (জাতীয় পার্টি), মই প্রতীকে চৌধুরী ফয়সল শোয়েব (বাসদ), গামছা প্রতীকে নুরুল হক (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ), মোমবাতি প্রতীকে জুবায়ের আহমেদ (বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট) ও হাতপাখা প্রতীকে  আবু হানিফা আহমদ হোসেন (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ )।

হবিগঞ্জ-২ আসনে জামানত হারান লাঙ্গল প্রতীকে শংকর পাল (জাতীয় পার্টি), হাতপাখা প্রতীকে আবুল জামাল মসউদ হাসান (ইসলামী আন্দোলন), গামছা প্রতীকে মনমোহন দেবনাথ (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ), আম প্রতীকে পরেশ চন্দ্র দাস (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি) ও সিংহ প্রতীকে আফছার আহমদ (স্বতন্ত্র)।

হবিগঞ্জ-৩ আসনে জামানত হারিয়েছেন লাঙ্গল প্রতীকে মোহাম্মদ আতিকুর রহমান (জাতীয় পার্টি), হাতপাখা প্রতীকে মুহিব উদ্দিন আহমেদ সোহেল (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) ও কাস্তে প্রতীকে পীযুষ চক্রবর্ত্তী (বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি)

হবিগঞ্জ-৪ আসনে জামানত হারিয়েছেন মোমবাতি প্রতীকে মৌলানা মুহাম্মদ ছোলাইমান খান রাব্বানী (বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট), গোলাপফুল প্রতীকে আনছারুল হক (জাকের পার্টি)  ও হাতপাখা প্রতীকে শেখ মো. সামছুল আলম (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ)।