উন্মুক্ত হচ্ছে ঐতিহ্য জাদুঘর

এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘরের ভেতরের দৃশ্য। কাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।  ছবি: প্রথম আলো
এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘরের ভেতরের দৃশ্য। কাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ছবি: প্রথম আলো

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আগেই হয়েছে। এখন দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর। কাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটির সদস্যদের পরিদর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হবে নগরের নতুন এ জাদুঘরের দ্বার। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত খোলা থাকবে এ প্রতিষ্ঠানটি।

জাদুঘরের কিউরেটর জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে সাধারণ দর্শকদের জন্য প্রতি শুক্র ও শনিবার খোলা থাকবে ঐতিহ্য জাদুঘর। শুক্র, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। শুক্রবার বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত নামাজের বিরতি।

কিউরেটর জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, ঢাকার আদি নবাবদের স্মৃতিবিজড়িত নিমতলী প্রাসাদ বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাকে সংরক্ষণ করেছে। এতে ১৭০০ থেকে ১৯০০ শতাব্দীর সময়কালের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে। এ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাকে জাদুঘরে রূপান্তরের পাশাপাশি একে একটি শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। জাদুঘরটি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার অন্যতম কেন্দ্র। সর্বোপরি সাধারণ ঐতিহ্যপিয়াসী নাগরিক, দর্শক, ঢাকাপ্রেমিক, গবেষক ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অতীত ঐতিহ্য তুলে ধরা এই জাদুঘরের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য।

এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘরের মূল ভবন।  ছবি: প্রথম আলো
এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘরের মূল ভবন। ছবি: প্রথম আলো

জানা গেছে, ঢাকার মোগল নায়েব-নাজিমদের জন্য ২৫০ বছর পূর্বে নির্মিত প্রাসাদ ভবনের মূল অংশ সংরক্ষণের অভাবে ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি অংশ বর্তমানে আছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজধানী ঢাকার ৪০০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন কর্মসূচির আওতায় ২০০৯ থেকে ২০১১ সালে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু নিয়মিত ব্যবহার না করায় আবার তা কার্যকারিতা হারাচ্ছিল এবং স্থায়ীভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল। এই ভবন ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ভবনটিতে জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে।

নতুন তৈরি জাদুঘরে ১৭০০-১৯০০ সাল পর্যন্ত ঢাকা এবং পূর্ব বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি ও জীবনভিত্তিক নিদর্শন সাজানো হয়েছে। এসব নিদর্শন ঢাকার বহু বনেদি ও সংস্কৃতিমান পরিবার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। জাদুঘর পরিদর্শনের জন্য দর্শকদের প্রবেশমূল্য ২০ টাকা এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য ১০ টাকা। বিদেশি দর্শকদের জন্য ২০০ টাকা।

ইতিহাসের পাতায় আর লোকমুখে এখনো আছে নিমতলী প্রাসাদ। তবে বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। কেবল ভবনের প্রধান প্রবেশদ্বারটি টিকে আছে, যার নাম ‘নিমতলীর দেউড়ি’। এটিই এখন এশিয়াটিক সোসাইটির ঐতিহ্য জাদুঘর।