প্রিয়তার মাথায় বিশ্বমুকুট

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরেই বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা ওড়ান প্রিয়তা ইফতেখার। জিম্বাবুয়ের হারারেতে, দ্য ভেন্যু অ্যাভান্ডলেতে অন্য প্রতিযোগীরা যখন ঝলমলে পোশাকে হাজির হন, সেখানে প্রিয়তা সাদা শাড়ি পরে মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবি সেজে তুলে ধরেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা। কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠের গান, গোলাগুলির আওয়াজ, জয়বাংলা ধ্বনি—সব মিলে দর্শকদের প্রথমে বুঝতে কষ্ট হলেও পরে যখন পুরো ইতিহাস জানলেন, তখন হলভর্তি দর্শক করতালি দিয়ে স্বাগত জানালেন প্রিয়তাকে। তারপরই প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি নারীর মাথায় উঠল ‘মিস কালচার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড-২০১৮’–এর মুকুট।

গতকাল প্রথম আলো কার্যালয়ে বসে প্রিয়তা ইফতেখার তাঁর মুকুট জয়ের গল্প শোনান। এ মুকুট জয়ের আগেই তিনি জয় করেন ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’।

মিস কালচার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করে ৫০টি দেশ। সর্বশেষ একটি দেশের প্রতিযোগীর মাথায় এ মুকুট তুলে দেয় জিম্বাবুয়ের ডেস্টিনেশন মার্কেটিং ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃপক্ষ।

মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড ২০১৮ বিজয়ের পর বাংলাদেশের মেয়ে প্রিয়তা ইফতেখারকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন প্রতিযোগিতার দুই রানারআপ। গত ১৬ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ের হারারেতে।  ছবি: সংগৃহীত
মিস কালচার ওয়ার্ল্ডওয়াইড ২০১৮ বিজয়ের পর বাংলাদেশের মেয়ে প্রিয়তা ইফতেখারকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন প্রতিযোগিতার দুই রানারআপ। গত ১৬ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ের হারারেতে। ছবি: সংগৃহীত

প্রিয়তা ইফতেখার নারী সাংবাদিকতার অগ্রদূত নূরজাহান বেগম এবং শিশুসাহিত্যিক, সংগঠক ও সাংবাদিক রোকনুজ্জামান খানের (দাদাভাই) নাতনি। প্রিয়তার বাবা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ এবং মা রীনা ইয়াসমীন আহমেদ মারা গেছেন। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য তাঁকে গত এক বছর বিভিন্ন দেশের প্রশিক্ষকদের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে।

প্রিয়তা মুকুট (রেপ্লিকা) নিয়ে দেশে ফিরেছেন ২৯ ডিসেম্বর। জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্টের হাত থেকে মুকুট নিতে শিগগিরই তিনি সে দেশটিতে যাবেন বলে জানালেন। প্রিয়তা বলেন, বিজয়ী হিসেবে আগামী এক বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে হবে। বাংলাদেশের পাশাপাশি জিম্বাবুয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যকেও তুলে ধরতে হবে। প্রিয়তা দেখালেন, তাঁর নকশিকাঁথার গাউনে গোল করে কাটা জাতীয় পতাকার পাশেই জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্টের সিগনেচার (গোল্ড) ব্যাজ লাগানো আছে।

এতিম মেয়ে শিশুদের জন্য কোনো ফাউন্ডেশন গঠন এবং নানি নূরজাহান বেগমের ‘বেগম ক্লাব’কে নতুন করে চালু করতে চান।