এবার মন্ত্রিসভায় জায়গা চান হ্যাটট্রিক সাংসদেরা

সংসদ নির্বাচনে পাবনার পাঁচটি আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। তাঁদের মধ্যে একজন পরপর পাঁচবার, তিনজন তিনবার ও একজন প্রথমবার বিজয়ী হয়েছেন। বিপুল ভোটে বিজয়ী হ্যাটট্রিক প্রার্থীরা এবার মন্ত্রিত্ব আশা করছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের পাঁচজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে পরপর চার বার বিজয়ের পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরীফকে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এবার তিনি পঞ্চমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন। ফলে মন্ত্রিত্ব ধরে রাখতে চান। এদিকে জামায়াতকে হারিয়ে প্রথমবারই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া আংশিক) আসনের শামসুল হক। দ্বিতীয়বার বিজয়ী হওয়ার পর তাঁকে আর মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। এবার তৃতীয়বারের মতো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হেভিওয়েট প্রার্থী আবু সাইয়িদকে হারিয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। এবার তিনি মন্ত্রিত্ব আশা করছেন। পাবনা-৩ (ভাঙ্গুড়া-চাটমোহর-ফরিদপুর) আসনে পরপর তৃতীয়বার বিজয়ী হয়েছেন মকবুল হোসেন। তিনিও মন্ত্রিত্ব আশা করছেন।

পাবনা-৫ (সদর) আসনের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক পরপর তিনবার জামায়াতকে হারিয়ে বিজয়ী হলেন। ফলে তিনি এবার মন্ত্রিত্ব পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন বলে মনে করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। গত ২৭ ডিসেম্বর পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সেও এ দাবি ওঠে। সভানেত্রী মিষ্টি হেসে ‘পাবনায় তো মন্ত্রিত্ব দিই’ বলে মন্তব্য করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রেজাউল রহিম বলেন, একসময় পাবনা সদর জামায়াতের দখলে ছিল। গোলাম ফারুক পাবনাকে জামায়াতমুক্ত করেছেন। এ ছাড়া পাবনা জেলা সদরে কোনো সাংসদকে কখনো মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে এবার তাঁরা মন্ত্রিত্ব আশা করছেন।

নবনির্বাচিত সাংসদ গোলাম ফারুক বলেন, ‘গত ১০ বছরে দলের জন্য, নির্বাচনী এলাকার মানুষের জন্য যা করেছি, তার আমলনামা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে। তাঁর বিচারে, আমার যোগ্যতা অনুসারে যদি তিনি মনে করেন আমাকে মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া যায়, তাহলে দেবেন। তিনি যেটা করবেন, সেটাই আমি খুশি মনে গ্রহণ করব।’

পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া আংশিক) আসনটিতে স্বাধীনতার পর থেকে যিনিই নির্বাচিত হয়েছেন, তিনিই মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। ফলে আসনটিতে পরপর তিনবার বিজয়ী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক এবারও মন্ত্রিত্ব আশা করছেন। সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, আবু সাইয়িদ ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। শামসুল হক টুকু এই প্রতারণার জবাব দিয়েছেন। ফলে তিনি মন্ত্রিত্ব পেতেই পারেন।

পাবনার নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক আবদুল মতীন খান বলেন, পাবনা জেলা সদর বিগত ৫০ বছর মন্ত্রিত্ব থেকে বঞ্চিত। তাই জেলা সদর থেকে একজন মন্ত্রী এখন পাবনাবাসীর প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। জেলা সদরে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হলে ঐতিহ্যবাহী এই জেলায় উন্নয়নের মাত্রা আরও বেগবান হবে।