চার বিসিএসের অবস্থা কী?

বর্তমানে চারটি বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রম নিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এই বিসিএসগুলো হচ্ছে, ৩৭, ৩৮,৩৯ ও ৪০ তম বিসিএস।

পিএসসি সূত্র জানায়, ৩৭ তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নন ক্যাডার নিয়োগ, ৩৮ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও মৌখিক পরীক্ষার দিন নির্ধারণ, ৩৯ তম বিশেষ বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ করা ও ৪০ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা গ্রহণ করা নিয়ে কাজ করছে পিএসসি।

৩৭ তম বিসিএসের নন ক্যাডারের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, আমরা বেশ কিছু প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শূন্য তালিকা পেয়েছি। তালিকা একত্রিত করা হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে এই সংখ্যার হিসাব জানাতে পারব।

৩৭ তম বিসিএসের বিজ্ঞাপনে ১ হাজার ২২৬ জনের কথা থাকলে ১ হাজার ৩১৪ জনকে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে সাধারণ ক্যাডার হয়েছেন ৪৬৫ জন, সহকারী সার্জন হয়েছেন ২৭২ জন, ডেন্টাল সার্জন হয়েছেন ৫১ জন। অন্যান্য কারিগরিতে ক্যাডার হয়েছেন ৩১৬ জন এবং শিক্ষা ক্যাডার হয়েছেন ২১০ জন। এ ছাড়া ৩ হাজার ৪৫৪ জনকে নন ক্যাডারে অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে। পদ পাওয়া সাপেক্ষে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হবে।

গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ৩৭ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। শেষ হয় গত বছরের ২৩ মে। এই পরীক্ষায় ৫ হাজার ৩৭৯ জন পাস করেন। ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন পরীক্ষার্থী। প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫২৩ জন উত্তীর্ণ হন। তবে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৮ হাজার ৩১ জন।

এদিকে ৩৮ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এখন সেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পালা। পিএসসির এ বিষয়ে কী কার্যক্রম চলছে জানতে চাইলে মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘আমরা পরীক্ষকদের খাতা দেখার নির্দেশনা দিয়েছি। দুজন পরীক্ষককে দিয়ে খাতা দেখাতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি খাতা চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আশা করছি এপ্রিলের মধ্যে এর ফলাফল দিতে পারব।’

গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ৩৮ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা হওয়ার প্রায় দুই মাসের মধ্যে এর ফলপ্রকাশ করা হয়। এতে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। পিএসসি সূত্র জানায়, ৩৮ তম বিসিএসের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। প্রশাসন ক্যাডারের ৩০০, পুলিশ ক্যাডারের ১০০টি পদসহ ৩৮ তম বিসিএসে সাধারণ ক্যাডারে মোট ৫২০ টি, কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে ৫৪৯টি এবং শিক্ষা ক্যাডারে ৯৫৫টি পদ থাকছে।

৩৯ তম বিশেষ বিসিএস আয়োজন করা হয় চিকিৎসকদের জন্য। গত বছরের ০৬ সেপ্টেম্বর ৩৯ তম বিশেষ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এরপর বর্তমানে এই বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম একদফা শেষ হয়েছে। আরেক দফা মৌখিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১৪ জানুয়ারি থেকে। এটি শেষ হলে চূড়ান্ত ফলাফল দেবে পিএসসি।

পিএসসি সূত্র জানায়, ৩৯ তম বিশেষ বিসিএসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সহকারী সার্জন পদে ১৩ হাজার ২১৯ জন এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ৫১৩ জন প্রার্থী পাস করেছেন। পাস করা প্রার্থীরা চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য মৌখিক পরীক্ষা দিচ্ছেন। গত বছরের ৩ আগস্ট ৩৯ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর ৩২টি কেন্দ্রে এই বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ৩৭ হাজার ৫৮৩ চাকরিপ্রত্যাশী অংশ নেন। পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ছিল ৯৩ শতাংশ। এই বিশেষ বিসিএসে ৪ হাজার ৫৪২ জন সহকারী সার্জন আর ২৫০ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেওয়া হবে।

৪০ তম বিসিএসে আবেদন করেছেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী। এ পর্যন্ত পিএসসিতে এত বিপুল পরীক্ষার্থী আবেদনের রেকর্ড তৈরি হয়েছে। কীভাবে এত প্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়া যায় সে জন্য এখন পরিকল্পনা করছে পিএসসি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন এ বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা আছে। যেহেতু এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আছে। এর ফাঁকে কীভাবে পরীক্ষাটি সুষ্ঠুভাবে নেওয়া যায় তার জন্য আমরা কাজ করছি।

গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ৪০ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ৪০ তম বিসিএসের আবেদন গ্রহণ শুরু হয় ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে। এই বিসিএসে মোট ১ হাজার ৯০৩ জন ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ক্যাডার অনুসারে প্রশাসনে ২০০, পুলিশে ৭২, পররাষ্ট্রে ২৫, করে ২৪, শুল্ক আবগারিতে ৩২ ও শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ৮০০ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।