কুমিল্লার মামলায় খালেদার জামিন শুনানি ফের পেছাল

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে আগুনে পুড়িয়ে আটজন হত্যার ঘটনায় করা মামলায় জামিন শুনানি আবারও পেছাল। ১৬ জানুয়ারি শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাবিবুর রহমান নতুন এ তারিখ নির্ধারণ করেন। একই সঙ্গে মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ক শুনানির দিনও ওই তারিখে নির্ধারণ করেন।

জানতে চাইলে কুমিল্লার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ কে এম সামছুল আলম অবসরে গেছে। বর্তমানে এই পদে কেউ নেই। নতুন জেলা ও দায়রা জজ ৮ জানুয়ারি যোগদান করবেন। এ কারণেই মামলার শুনানি ও অভিযোগ গঠন বিষয়ক শুনানির দিন পেছানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল চলতি মাসের ৭ জানুয়ারি, গতকাল সোমবার। এদিন কোনো শুনানি হয়নি।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী মো. কাইমুল হক বলেন, চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বিচারিক আদালত কয়েক দফা তারিখ দিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে আমরা জজ কোর্টে পুনরায় জামিনের আবেদন করেছি। গত ১১ নভেম্বর জেলা ও দায়রা জজ ছুটিতে ছিলেন। পরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক আবদুর রহিম ওই মামলার জামিনের শুনানি করেন। তখন রাষ্ট্রপক্ষ সময় চাওয়ায় বিচারক ২৫ নভেম্বর শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করেন। তখন শুনানি করতে গেলে ,জেলা ও দায়রা জজ কোনো শুনানি না করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন। এদিনও শুনানি হয়নি।

বর্তমানে খালেদা জিয়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে রাজধানীর নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে আছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাস কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় আসামাত্র দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে ঘটনাস্থলে সাতজন ও হাসপাতালে নেওয়ার দুদিন পর আরও একজনসহ মোট আটজন মারা যান ও ২৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হলে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা তদন্ত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মো. ইব্রাহিম।

দুই বছর এক মাস তিন দিন পর ২০১৭ সালের ৬ মার্চ কুমিল্লার আদালতে ওই দুই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সালাউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও বিএনপির উপদেষ্টা সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী, চৌদ্দগ্রামের জামায়াতের সাবেক সাংসদ সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির সাহাবউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. মিজানুর রহমান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির শাহজাহান, চিওড়া ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির ও ক্যাডার মেজবাহ উদ্দিন ওরফে নয়ন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদাসহ ৭৮ জনের নামে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া মামলার ৫১ নম্বর আসামি।