'সৈয়দ আশরাফ বলতেন, রাজনীতি করলে দুর্নীতি ছাড়তে হবে'

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্মরণে আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) আয়োজিত এক নাগরিক শোকসভায় বক্তব্য দেন ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন। ছবি: বাসস
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্মরণে আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) আয়োজিত এক নাগরিক শোকসভায় বক্তব্য দেন ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন। ছবি: বাসস

সৈয়দ আশরাফ তার সহকর্মী ও সহযোদ্ধাদের যে কথাটি জোর দিয়ে বলতেন, তা হলো- ‘রাজনীতি করতে চাইলে দুর্নীতি ছাড়তে হবে। আর দুর্নীতি করলে রাজনীতি ছাড়তে হবে।’

সদ্য প্রয়াত জন প্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্মরণ করে এমন কথা বললেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁরা বললেন, পদের গরিমা সৈয়দ আশরাফকে কখনো আচ্ছন্ন করেনি। তাঁর ব্যক্তিত্ব পদের চেয়ে বড় ছিল। রাজনৈতিক নেতাদের কাছে সৈয়দ আশরাফ অনুকরণীয় হওয়া উচিত। তিনি ছিলেন বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং দলমত-নির্বিশেষে সকলের কাছেই অত্যন্ত প্রিয় একজন মানুষ।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সদ্য প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্মরণে আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) আয়োজিত এক নাগরিক শোকসভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে এই শোকসভায় বক্তারা বলেন, ‘সততা, নম্রতা , সরলতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সর্বজন শ্রদ্ধেয় করে তুলেছিল। এমন চিত্র রাজনীতির অঙ্গনে বিরলই বটে।’
শোকসভায় সভাপতির বক্তব্যে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন, বিশ্বাসী, অনুগত নেতা ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। তার মতো নেতা রাজনৈতিক জীবনে হাতে গোনা কয়েকজন পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগের মতো এত বড় একটি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও তার মধ্যে অহংকার ছিল না, রাজনৈতিক কোনো নেতা কর্মী কখনই বলতে পারবেন না সৈয়দ আশরাফ তাদের সঙ্গে কখনো জোরে বা ধমক দিয়ে কথা বলেছেন। তিনি সব সময়ই ছিলেন বিনয়ী।’

ডিসিসির মেয়র বলেন, যেসব নতুন মন্ত্রী-এমপিরা শপথ নিলেন তাদের কাছে সবাই আশা করবে তারাও যেন সৈয়দ আশরাফের মতো মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন, তাদের কাজ কথা আচরণের মধ্য দিয়ে।

স্মরণসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক জীবন তিনি অতিবাহিত করেছেন সততার মাধ্যমে। একজন রাজনৈতিক নেতার কাছে এমনটাই আশা করে সব মানুষ। তাই সৈয়দ আশরাফ অনুকরণীয় হওয়া উচিত সব নেতার কাছেই।
তিনি বলেন, প্রতিটি জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন । এর থেকে আমরা বুঝতে পারি তিনি সবার কাছে কতটা জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন।
আলোচকেরা বলেন, দেশে ১/১১ এর সময় থেকে শুরু করে একটি কঠিন সময়ে সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দীর্ঘ সময়ে তিনি পদ-পদবি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়েছেন বা জ্ঞাতসারে কাউকে অন্যায় সুবিধা দিয়েছেন, এ রকম অভিযোগ কেউ করতে পারবেন না।
শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, পরিবেশ আন্দোলনের সহসভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
সিটি করপোরেশনের সচিব শাহাবুদ্দিন খান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. জাহিদ হোসেন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) শেখ সালাহ্উদ্দিনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।