'উড়াল ফুটপাত' হচ্ছে না

এই নকশার আদলে গুলিস্তান এলাকায় উড়াল ফুটপাত হওয়ার কথা ছিল।
এই নকশার আদলে গুলিস্তান এলাকায় উড়াল ফুটপাত হওয়ার কথা ছিল।

গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকায় ‘উড়াল ফুটপাত’ হচ্ছে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জানিয়েছে, এই প্রকল্প অনুমোদন করেনি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।

২০১৬ সালে এই প্রকল্প হাতে নিয়েছিল ডিএসসিসি। এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই উড়াল ফুটপাতের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১৫ কোটি টাকা। এ নিয়ে ২০১৬ সালের ৪ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘গুলিস্তানে এবার উড়াল ফুটপাত!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ডিএসসিসির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ জানায়, সচিবালয়ের সামনে থেকে জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকাররম, গুলিস্তান, আহাদ পুলিশ বক্স, গোলাপ শাহ মাজার, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পর্যন্ত উড়াল ফুটপাত নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। সড়ক থেকে এর উচ্চতা নির্ধারণ করার কথা ছিল উড়ালসড়কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। প্রাথমিকভাবে এর প্রশস্ততা ধরা হয়েছিল আট ফুট। উড়াল ফুটপাত থেকে সড়কের সুবিধাজনক স্থানে পথচারীদের ওঠানামার জন্য ২৬টি সিঁড়ি রাখার পরিকল্পনা ছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসসিসির এক কর্মকর্তা বলেন, গুলিস্তানে হকারদের উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়ে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল। প্রকল্প হাতে নেওয়ার পর শুরুর দিকেই নগর পরিকল্পনাবিদেরা এর সমালোচনা করেন। সর্বশেষ একনেক থেকেও ইতিবাচক সাড়া না মেলার কারণে তা আর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, বিশেষ অভিযান পরিচালনার পর গুলিস্তান দু-এক দিন হকারমুক্ত থাকলেও বেশির ভাগ সময়ই গোটা এলাকার ফুটপাত থাকে হকারদের দখলে। এতে এই এলাকা দিয়ে কেউ স্বাভাবিকভাবে চলাচলও করতে পারে না। এর স্থায়ী সমাধানে নানা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ডিএসসিসি।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব খাদেম প্রথম আলোকে বলেন, নানা কারণে উড়াল ফুটপাত নির্মাণকাজ আপাতত স্থগিত আছে।

এদিকে উড়াল ফুটপাতটি যেসব এলাকায় ওপর দিয়ে করার কথা ছিল, সেসব এলাকায় গতকাল বুধবার বেশ কয়েকজন হকার ও পথচারীর সঙ্গে কথা হয়। পথচারীরা বলছেন, পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে ডিএসসিসিকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

প্রতিদিনই তেজগাঁও থেকে গুলিস্তানের ঢাকা ট্রেড সেন্টারে ব্যবসার কাজে যাওয়া-আসা করেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, তেজগাঁও থেকে জিরো পয়েন্টে আসতে তাঁর সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ মিনিট। কিন্তু জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা ট্রেড সেন্টারে পৌঁছাতে গাড়িতেই তাঁর আধা ঘণ্টার বেশি সময় লেগে
যায়। আবার হেঁটে যাওয়াও মাঝেমধ্যে কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের এমন কিছু উদ্যোগ নেওয়া উচিত, যাতে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মানুষের মুক্তি মেলে।