ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আগুন দিলো আসামির বাড়িতে

নিহত অটোচালকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন শেষে বাড়ি ফেরার পথে এলাকাবাসী আসামি জসিমের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গতকাল বিকেলে নওদাপাড়ার শেখপাড়ায়।  ছবি: প্রথম আলো
নিহত অটোচালকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন শেষে বাড়ি ফেরার পথে এলাকাবাসী আসামি জসিমের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গতকাল বিকেলে নওদাপাড়ার শেখপাড়ায়। ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আটক আসামির বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরের নওদাপাড়া-শেখপাড়া এলাকায় বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে। এর আগে গত বুধবার রাত ১০টার দিকে জেলার গোদাগাড়ীর সারাংপুর এলাকা থেকে ওই অটোরিকশাচালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত অটোরিকশাচালকের নাম জসিম উদ্দিন (২০)। তাঁর বাবার নাম আরফান আলী। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের নওগাপাড়ার মাস্টারপাড়া এলাকায়। সোমবার থেকে জসিম নিখোঁজ ছিলেন।

নগরের শাহ্ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ জানান, সোমবার থেকে জসিম নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় পরদিন মঙ্গলবার তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এর ভিত্তিতে বুধবার পুলিশ নিহত জসিমের দুই বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে তাঁরা স্বীকার করেন যে অটোরিকশাটির জন্য জসিমকে হত্যা করা হয়েছে। পরে তাঁদের দেখানো স্থান থেকেই গোদাগাড়ী থানার পুলিশের সহায়তায় নিহত জসিমের লাশ উদ্ধার হয়।

>পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিখোঁজ অটোরিকশাচালককে হত্যার কথা স্বীকার করেছের দুই বন্ধু।

এই দুই বন্ধু হচ্ছেন নগরের শেখপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে জসিম উদ্দিন ও গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে সুমন আলী। ওসি জানান, অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে পরিকল্পিতভাবে তাঁরা জসিমকে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

বন্ধুদের হাতে জসিম খুন হওয়ার কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল বিকেলে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী নগরের আমচত্বর এলাকায় মানববন্ধন করেন। এই কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আটক আসামি জসিম উদ্দিনের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা রেন্টু মিয়া বলেন, এলাকার লোকজন মানববন্ধন করে। পড়ে তাদের আটক আসামি জসিম উদ্দিনের বাড়ির দিকে তেড়ে আসতে দেখেই এ আসামির স্ত্রী ও মা পালিয়ে যান। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ‘খুনি জসিমের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দেয়। রেন্টু শেখ জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে পুলিশ রাজীব হোসেন নামের আরেক যুবককে আটক করেছে। তাঁর বাড়ি গোদাগাড়ীর মাটিকাটা গ্রামে। এই তিন আসামিকে নিয়ে পুলিশ অটোরিকশাটি উদ্ধারে নাটোরে অভিযান চালাচ্ছে।